ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে আজও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অধিকাংশ উপকূলীয় এলাকা। কিছু এলাকায় মঙ্গলবার বিকেল থেকে সংযোগ দেওয়া শুরু করেছে পল্লী বিদ্যুৎ। তবে এখনো যেসব এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে, সেসব এলাকায় টাকা দিয়ে মোবাইল চার্জ দিতে দেখা গেছে এলাকাবাসীকে। দুর্যোগকালে জেনারেটর দিয়ে এই মোবাইল চার্জিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন এলাকার কিছু দোকানদার।
এদিকে মোবাইল চার্জ দিলেও নেটওয়ার্ক সমস্যা এখনো কাটেনি অনেক এলাকায়। স্বজনদের সঙ্গে দুই দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপকূলের মানুষ।
পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা সদরের সংবাদকর্মী আহাদ শিমুল জানান, গত রবিবার সকাল থেকেই এই উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলার নাজিরপুরেও একই অবস্থা বলে জানান তিনি।
রবিবার থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, নাজিরপুর উপজেলা সদরের ছালাম ডেকারেশনে টাকার বিনিময়ে মোবাইল চার্জ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি মোবাইলে শতভাগ চার্জ দিতে নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। সেখানে শতাধিক মোবাইল চার্জে ছিল।
সুযোগ পেতে সিরিয়াল দিয়ে রেখেছেন আরো অনেকে।
জেলার মঠবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সেখানে খুব ভোর থেকেই বিদ্যুতের সংযোগ দিতে বিদ্যুৎ কর্মীরা কাজ করছেন। তবে কখন বিদ্যুতের লাইন চালু করা যাবে তা সঠিক করে বলতে পারছেন না তারা।
এদিকে ফরিদপুর শহর বাদে জেলার ৯ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় গত রবিবার রাতে ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিদুৎ নেই। পৌর এলাকা ছাড়া অন্য এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ চালু করতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ।
বোয়ালমারী উপজেলার ময়না গ্রামের বাসিন্দা জেনারেটরে মোবাইলে চার্জ দিচ্ছেন টাকার বিনিময়ে। পেশায় কসমেটিকস ব্যবসায়ী শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিন ধরে গ্রামে বিদ্যুৎ না আসায় গ্রামের দুই শতাধিক মানুষকে জেনারেটরে মোবাইলপ্রতি ২০ টাকায় চার্জ দিয়েছি।’
সেখানে মোবাইল চার্জ দেওয়া রংমিস্ত্রি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘরে সদাই না থাকলেও এক দিন চলে; কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকলে মাথায় কাজ করে না।’
তিনি বলেন, ‘অবসর সময়ে মোবাইলে ফেসবুকসহ ইউটিউব দেখে সময় কাটাই। পৌর শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও গ্রামে এখনো সংযোগ চালু হয়নি আমাদের। জেনারেটর মালিক ময়না গ্রামের মতিয়ারের ছেলে মামুন শেখ এ ব্যবস্থা করেছেন।’
ভাঙ্গা উপজেলার কলেজ শিক্ষক দিলীপ দাস জানান, রবিবার রাত থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত একটানা বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস বইতে থাকে। এই বাতাসে এ এলাকায় বেশ কিছু গাছপালা পড়ে গেছে। এ ছাড়া রবিবার রাত থেকে বিদ্যুৎবিহীন থাকে এ উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। সেই সাথে ফোনের নেটওয়ার্কও কাজ করছিল না।
মধুখালী পৌর এলাকার মেছড়দিয়া গ্রামের সংবাদকর্মী মনিরুজ্জামান মুন্নু জানান, রিমালের কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও মধুখালীতে রবিবারের পর থেকে আজ মঙ্গলবার সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়েছে। ১১টি ইউনিয়নের অনেক জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.