ফুটবল

অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে বায়ার্নের হৃদয় ভেঙে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। আক্রমণে আধিপত্য দেখালেও অবশ্য কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলছিল না। বায়ার্ন মিউনিখের পোস্টে বিশ্বস্তের হাত হয়ে ছিলেন ম্যানুয়েল নয়ার। রিয়ালের আক্রমণ সামলে প্রতি আক্রমণে গিয়ে বায়ার্নই প্রথমে এগিয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে আলফান্সো ডেভিসের করা সেই গোলে জয়ের আশা দেখছিল দলটি কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ যে চ্যাম্পিয়নস লিগের রাজা তার প্রমাণ মিলল আরেকবার। ৮৮ মিনিট থেকে যোগ করা প্রথম প্রথম মিনিট; এই ৪ মিনিটের মধ্যে বদলি নামা হোসেলু দুইবার জাল খুঁজে নিলে ২-১ গোলে জিতে রিয়াল পৌঁছে যায় ফাইনালে। দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালের জয় ৪-৩ ব্যবধানে।

বায়ার্নের মাঠ থেকে ২-২ গোলের সমতা নিয়ে ফেরা রিয়াল এদিন এগিয়ে যেতে পারতো শুরুতেই কিন্তু বক্সের ভেতর থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের প্রচেস্টা দুরের পোস্টে লেগে ফেরে।

ফিরতি বল জালে পাঠানোর সুযোগ ছিল রদ্রিগোর কিন্তু এই ব্রাজিলিয়ানের শট দারুণ দক্ষতায় আটকে দেন ম্যানুয়েল নয়ার।

এরপর বায়ার্নের রক্ষণে আরও চাপ বাড়ায় রিয়াল। বায়ার্নও সুযোগ বুঝে প্রতি আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। ২৮ মিনিটে হ্যারি কেইনকে হতাশ করেন আন্দ্রি লুনিন। ইংলিশ এই ফরোয়ার্ডের ভলি ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান লুনিন।

দশ মিনিট পরই আরেকবার রিয়ালকে হতাশ করেন নয়ার। ভিনিসিয়ুসের শট বক্সে থাকা রিয়ালের কোনো ফুটবলার পা ছোঁয়াতে না পারলেও বল দূরের পোস্টে জালে জড়াতে যাচ্ছিল কিন্তু ঝাপিয়ে বাইরে ঠেলে দেন নয়ার।

মধ্যবিরতি থেকে ফিরে দুই দলই গোলের খোঁজে নামে। আরেকবার হ্যারি কেইনের প্রচেষ্টা আটকে যায় লুনিনের গ্লাভসে।

একটু পরই সুযোগ হারায় রিয়ালও। ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বলে রদ্রিগো পা ছোঁয়ালেও তা পোস্টে থাকেনি। পোস্ট ঘেঁষে তা বাইরে চলে যায়।

প্রথমার্ধের মতো এই অর্ধেও বিধ্বংসী রুপে দেখা মেলে নয়ারের। রদ্রিগোর ফ্রিকিক ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর ভিনিসিয়ুসের শট ফিস্ট করে বাইরে ঠেলে দেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষক। ৬৮ মিনিটে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু স্তব্ধ করে ম্যাচে এগিয়ে যায় বায়ার্ন মিউনিখ। সার্জ জিনাব্রির বদলি নামা আলফান্সো ডেভিস এনে দেন কাঙ্ক্ষিত সেই গোল। নিজেদের অর্ধ থেকে হ্যারি কেইনের লম্বা করে বাড়ানো পাস বাম দিকে পেয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের মাপা শটে জাল খুঁজে নেন এই উইঙ্গার। কিছুই করার ছিল না আন্দ্রি লুনিনের।

চার মিনিট পর বায়ার্নের জালে বল পাঠায় রিয়াল কিন্তু  তা বাতিল করে দেন রেফারি। বায়ার্নের বক্সে জসুয়া কিমিচকে হাত দিয়ে মুখে আঘাত করে ফেলে দেন নাচো। ভিএআর দেখে গোল বাতিলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। হারতে বসা রিয়াল ম্যাচে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালায়। ম্যাচে ফেরার সেই গোলও পেয়ে যায় পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা নয়ারের মারাত্মক ভুলে। ৮৭ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের শট নয়ার গ্লাভসে নিতে না পারলে দৌড়ে এসে আলগা বল জালে পাঠান বদলি নামা হোসেলু। 

যোগ করা সময়ে আবারও হোসেলু ম্যাজিক। রুডিগারের ক্রস পেয়ে ছয় গজ বক্সের ভেতর থেকে জালে পাঠান এই স্প্যানিশ। শুরুতে সহকারী রেফারি অফসাইডের পতাকা তুললেও ভিএআর পরীক্ষায় দেখা যায় অনসাইডেই ছিলেন হোসেলু। রেফারি গোলের সিদ্ধান্ত দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠে রিয়ালের ফুটবলার ও সমর্থকরা। তাতে আরও একবার প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ১৮তম বারের মতো ইউরোপ সেরার ফাইনালের মঞ্চে পৌঁছে যায় লস ব্লাংকোরা। আগামী পহেলা জুন ওয়েম্বলিতে ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে রিয়াল।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker