জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রপ্তানিমুখী একটি প্রতিষ্ঠান পাটকলের জমি জবর দখল করে একটি চক্র রমরমা মাদকের কারবার চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার রাতে “দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি:” এর এজিএম আতিকুর রহমান এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে আতিকুর রহমান (এজিএম) জানান, স্থানীয় সাবেক বিজিএমসি কলোনিতে ৩০-৩৫ টি পরিবার প্রায় কয়েক বছর ধরে দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি: এর জমিতে বসবাস করে আছেন। শুধু তাই নয়, ওই জমিতে তারা মাদকের রমরমা ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। সেখানে প্রকাশ্যে চোলাই মদ, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজাসহ নানা মাদকের কেনাবেচা চলে। সহজলভ্য হওয়ায় উঠতি বয়সের ছেলেরা এসবে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে প্রতিদিন বেড়েই চলছে বিভিন্ন অপরাধ।
বিষয়টি বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ এমপিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করা হয়েছে। বর্তমান সাংসদের সহযোগিতায় ওই জমিতে প্রাচীর নির্মাণ করা গেলেও দখল ও মাদকমুক্ত করা যায়নি।
কলোনীতে বসবাসকারী বুলবুলি চৌহানী, ললিতা চৌহানী, মহন চৌহানী, সন্ধা রবি দাসসহ আরো অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই কলোনিতে বসবাস করে আসছে তারা। বাসফু সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবার মদ বেচাকেনার সাথে জড়িত। তাদের কারণে আমাদেরও দোষী সাবস্ত করা হচ্ছে। এ কারনে কলোনির জায়গা থেকে কারখানার এজিএম আতিকুর রহমান চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।
বাসন্তী ও শীলা বাসফু বলেন, ‘দুইদিন আগে আমাদের স্বামীকে আটক করে নিয়ে গেছে পুলিশ। আমরা সুইপারের কাজ করি। মদ তো নিজেরা একটু আকটু খাওয়ার জন্য তৈরি করি। বেচার জন্য তো নয়।’
এ ব্যাপারে কারখানার এজিএম আতিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি করতে এ কারখানা এলাকাকে মাদক ও দখলমুক্ত করা অতি জরুরি। তা না হলে বিদেশি বায়াররা তাদের মুখ ফিরিয়ে দিবে। এতে কারখানা সংশ্লিষ্ট সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। দেশ হারাবে বৈদেশিক মুদ্রা।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিন আগেও পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদকসহ দুই জনকে আটক করেছে। এ অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘দি গোল্ডেন ফাইবার ট্রেড সেন্টার লি: এর জায়গা দখল করে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে কলোনির কিছু বাসিন্দা। এ ব্যাপারে কারখানার কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সাথে কথা বলে এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ-বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রশিদ এমপির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে বসবাসকারীদের অন্যত্র আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.