ঠাকুরগাঁও

বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে

নেই বৃষ্টিপাত, সঙ্গে প্রচন্ড দাবদাহ। পুড়ছে বিভিন্ন জনপদ। জন জীবনে দেখা দিয়েছে নাভিশ্বাস এমন খড়ায় ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে-সেই বিশ্বাস থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে এবার ইসলাম ধর্মের রীতি মেনেই বুধবার রাতে মেঘ-বৃষ্টি নামে দুই ব্যাঙের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অনেককেই। হলুদ বাটা, গায়ে হলুদ, দল বেধে বিয়ের গীত গাওয়া, ইজাব-কবুল করার মত আয়োজন কোন মানুষের বিয়ের জন্য নয়। 

বৃষ্টির আশায় ঘটা করে দেয়া হয়েছে দুটি ব্যাঙের বিয়ে। পীরগঞ্জ সহ আশ পাশের জেলা ও উপজেলায় কয়েক দিন ধরে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। গরমে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে জন জীবন। তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়নপুর প্রধান পাড়ায় বুধবার আয়োজন করা হয় এমন বিয়ের। বর হিসেবে মেঘ নামে একটি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে আর কনে হিসেবে বৃষ্টি নামে অপর একটি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়নপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে। 

শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ ও অলতাও পড়ানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকালে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সন্ধায় ভাকুড়া খালপাড়া থেকে অনুষ্ঠানিক ভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়পুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসেন বর পক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে ইসলাম ধর্মে রীতি মতে কাজী ডেকে দেন মোহর ধার্য্য করে ইজাব কবুল করানো হয় বর ও কনেকে। সম্পন্ন হয় বিয়ে। ইসলামী ভাব ধারায় আয়োজন করা ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে নারী পুরুষের ঢল নামে।

কনে বৃষ্টির পিতা আমজাদ আলী জানান, এ বিয়ের দেন মোহর ধার্য করা হয় ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। এর মধ্যে নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার ৩৯৯ টাকা এবং অবশিষ্ট টাকা বাকি রেখে ইসলামী বিধি বিধান অনুসরন করেই বিয়ে সম্পান্ন করা হয়। বিয়ে শেষে উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।মিনারা বেগম নামে এক গৃহবধু জানান, ব্যাঙের বিয়ে হচ্ছে শুনেই দেখতে এসেছেন। ইসলামী শরিয়ত মতে মানুষের মত ব্যাঙের বিয়ে দেয়া তিনি এটাই প্রথম দেখেছেন। এতে তার খুব ভাল লেগেছে।তবে সোহেল হাসান শুভ নামে এক যুবক জানান, ইসলামী বিধান অনুসরন করে ব্যাঙে বিয়ে দেয়া ঠিক নয়। 

এটি কুসংস্কার এমন আয়োজন এবার প্রথম দেখলেন তিনি। বিয়ের পরের দিন বৃহস্পতিবার বর মেঘের বাড়িতে আয়োজন করা বৌভাতের। নিমন্ত্রণ পেয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নেন অনেককেই।ব্যাঙের বিয়ে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, লোকজন বিশ্বাস থেকে প্রবাহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker