শিক্ষা

চাকরিচ্যুত শিক্ষককে মনিপুর স্কুলের প্রধানের দায়িত্ব

রাজধানীর মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিনা ছুটিতে গত ছয় মাস ধরে তিনি বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছায় অনুপস্থিত রয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তাকে এ প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে বিতর্কের গুঞ্জন উঠেছে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ঢাকা মহানগরীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, ১৬ ফেব্রুয়ারি স্মারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন (নং-১৫২৭২/২০২২; তারিখ: ১৫/১২/২০২২) এর নির্দেশনার আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়েও অদ্যাবধি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মামলার পিটিশনারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ (ইনডেক্স নং- ডি১৬৬০০২) এরই মধ্যে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সে মোতাবেক পরবর্তী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হলেন মো. জাকির হোসেন (ইনডেক্স নং-ডি২৭০৫৭৮)। আদালতের নির্দেশনা আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো. জাকির হোসেন গত ছয় মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। সম্প্রতি গর্ভর্নিং বডির সিদ্ধান্তে দুটি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে যোগদান করতে বলা হলেও তিনি যোগদান করেননি। সে কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ। মাউশি থেকে তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার ওপরে বর্তমানে দাায়িত্বরত ফরহাদ হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে তিন বছরের চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে গভর্নিং বডি। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকার পরও এ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা দেওয়া নিয়ে নতুন বির্তক সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিধি মোতাবেক গভর্নিং বডি আমাকে চুক্তিভিত্তিক তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। আমার নিয়োগ সম্পূর্ণ বৈধ। এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় চাকরিচ্যুত একজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলার কথা বিবেচনা করে সেখানে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে গভর্নিং বডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি স্কুল পর্যায়ে এমপিওভুক্ত রয়েছে। এমন প্রতিষ্ঠানে কলেজ থাকলে প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

তবে চাকরিচ্যুত কাউকে প্রতিষ্ঠানপ্রধান করার বিষয়টি জানা নেই বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। নির্দেশনায় কোনো ত্রুটি বা সংশোধন প্রয়োজন হলে গভর্নিং বডি তা লিখিতভাবে জানাতে পারে। লিখিতভাবে জানালে তা সংশোধন করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker