কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে প্রকাশ্য দিবালোকে শিশু পুত্রের সামনে বাবুল মিয়া (৩৩) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী নুরে আলম (৩০)। নিহত বাবুল মিয়া একজন ফেরিওয়ালা ও পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়া নদীর চর মহল্লার মোতালিবের ছেলে।
শনিবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে কটিয়াদী পৌর এলাকার পশ্চিমপাড়া আওয়াল মিয়ার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, শুক্রবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে বাবুল মিয়ার ঘরে সিঁধ কেটে বাবুল মিয়ার ঘর থেকে তার মোবাইল ফোন ও বিদেশ যাওয়ার জন্য জমানো নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির ঘটনার সময় বাবুল মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ (৮) চোরকে দেখে ফেলে। সে চিনতে পারে চোর প্রতিবেশী নূরে আলম। সকালে সে তার বাবাকে জানায়, ঘরে চুরি করতে আসা দুইজনের মধ্যে প্রতিবেশী নূরে আলম ছিল। ছেলের বক্তব্যের ভিত্তিতে বাবুল মিয়া এলাকার কাউন্সিলরসহ কয়েকজনকে বিষয়টি জানান। সন্ত্রাসী নূরে আলমের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করছে শুনে সে ছুরি নিয়ে বাবুল মিয়াকে খুঁজতে থাকে। বাড়ির নিকটবর্তী একশত গজ দূরে দোকানের সামনে বাবুল মিয়া এ সময় তার ছেলে আব্দুল্লা কে নিয়ে আসলে দোকানের সামনে তাদেরকে দেখে নূরে আলম বিচার দেয়ার বিষয়টি জানতে চায়। এ সময় লোকজনের সামনে কথা না বলে তাদেরকে ডেকে ২০-২৫ গজ দূরে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ত্রাসী নূরে আলমের পিতা রইছ উদ্দিন,বড় ভাই ফজলুসহ তার পরিবারের আরো কিছু লোকজন অপেক্ষা করতে থাকে। বাবুলকে সেখানে নিয়ে তাদের সামনে চুরির ঘটনায় বিচার দেয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে কথা বলার সময় তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে বাবুল মিয়ার গলায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এ সময় ছেলের চিকিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে বাবুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবুলকে ছুরিকাঘাতের পর নূরে আলম ছুরি হাতে তার বাড়িতে গিয়ে বাবুলের স্ত্রী ও ছোট ভাইকে দৌড়ায় এবং ছোট ভাইকে ছুরিকাঘাত করে জখম করে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক নূরে আলমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অন্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসী নূরে আলম চুরি,ছিনতাই, মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) সুজন চন্দ্র সরকার ও কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদত হোসেন জানান,আমরা ঘাতক নূরে আলমকে আটক করেছি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।