কটিয়াদী

কটিয়াদীতে এক প্রসূতিকে প্রাণনাশের হুমকি, জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মামলা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে হাসি আক্তার (৩৫) নামে এক প্রসূতিকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কটিয়াদী উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত রেঁনেসা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: মাহফুজুল হক সোহাগকে আসামি করে গত ১৩ জুলাই কটিয়াদী মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেছেন হাসি আক্তারের স্বামী হারুন মিয়া।

প্রসূতি মা হাসি আক্তার বলেন,গত ২৬ এপ্রিল কটিয়াদী রেঁনেসা হাসপাতালে আমি প্রসব ব্যথা নিয়ে ভর্তি হই। ওই দিনই আমার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। অপারেশনের সময় আমার ও পরিবারের কারোর অনুমতি ছাড়া ডা: সোহাগ আমার জরায়ু কেটে ফেলেন। অপারেশনের তিন দিন পর আমি ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে আসি। বাড়িতে আসার পাঁচ দিন পর আমার সেলাই কাটার জন্য পুনরায় হাসপাতালে এলে ডা: সোহাগ জানান,আমার অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। ফলে আমাকে আবার ভর্তি হতে হবে। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমি ভর্তি হয়ে ১৫ দিন চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়িতে চলে যাই। অপারেশনের পর থেকেই আমার ডান পা সোজা করতে পারি না। মনে হয় কোথাও যেন রগ ছিঁড়ে যাচ্ছে। অপারেশনের স্থানেও ইনফেকশন রয়েছে।

এমন অবস্থায় আমি আমার মোবাইল ফোন থেকে ডা: সোহাগের নম্বরে ফোন দিয়ে আমার সমস্যার কথা জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন তুই তো এখনো প্রাণে বেঁচে আছিস,তোকে চিকিৎসার সময় মেরে ফেলাই উচিত ছিল। তিনি হুমকি দিয়ে আরও বলেন আমি এই পর্যন্ত ১৪-১৫ জন রোগী মাইরা ফালাইছি। তোকেসহ আরও ২-৪ জন মাইরা ফালাইলেও আমার কিছু করতে পারবে না। যার বিস্তারিত কল রেকর্ড আমার কাছে আছে। এমতাবস্থায় আমার অঙ্গহানি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমার স্বামী একজন গরিব মানুষ আমি ডাক্তারের শাস্তি চাই। আর কোনো রোগী যেন তার অপচিকিৎসার শিকার না হয়।

অভিযোগের বিষয়ে রেঁনেসা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: মাহফুজুল হক সোহাগ বলেন,আমি হাসি আক্তার নামে এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশন করেছিলাম। তার অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় পুনরায় তাকে চিকিৎসা প্রদান করি। এতে তিনি সন্তুষ্ট না হয়ে আমাকে ফোন করে বিরক্ত করলে উত্তেজিত হয়ে আমি এই পর্যন্ত ১৪-১৫ জন রোগী মাইরা ফালাইছি এ কথা বলে ফেলি। আমার চিকিৎসা জীবনে কোনো রোগীর প্রাণহানি হয়নি এবং হাসি আক্তারকে মেরে ফেলার হুমকি দিইনি।

কটিয়াদী মডেল থানার এসআই ও অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: দুলাল মিয়া জানান,ডা: মাফুজুল হক সোহাগের বিরুদ্ধে প্রসূতি হাসি আক্তারের স্বামী হারুন মিয়ার করা অভিযোগটির তদন্ত চলছে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker