শিক্ষা

সিনিয়র ছাত্রকে লাঞ্ছিত করায় জাবির ২ ছাত্রীকে বহিষ্কার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র এক ছাত্রকে শারীরিকভাবে লঞ্ছিত করার অভিযোগে দুই ছাত্রীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে তাদেরকে এ শাস্তির সুপারিশ করা হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিন্ডিকেটের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সুপারিশটি আমলে নিয়ে তাদেরকে বহিষ্কারাদেশ দেয় সিন্ডিকেট। রাত ১১টার পর জাবির রেজিস্ট্রার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বহিষ্কারকৃতরা হলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ ব্যাচের সুমাইয়া বিনতে ইকরাম ও তার বান্ধবী একই বিভাগের অনিকা তাবাচ্ছুম মিম। সুমাইয়া এক বছর ও অনিকা তাবাচ্ছুমকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সুমাইয়া ৪৪ ব্যাচের এক ছাত্রকে থাপ্পড় মারে ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্র রাত ১২টার দিকে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার দাবি করে। পরে একই রাতে প্রক্টর অফিসে উভয়পক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের লিখিত সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। প্রক্টর অফিসে উপস্থিত প্রশাসনিক ও শিক্ষক সমিতির নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টির সুরাহা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে জানা যায়, মারধরের শিকার শিক্ষার্থী দুজন বান্ধবীসহ ৫ জন বটের রাস্তা ধরে হাঁটছিল। এ সময় সুমাইয়া তাদের পেছন থেকে সাইড দিতে বলে। তখন ভুক্তভোগী ছাত্র ‘আপু, রাস্তার তো ৭০ ভাগে জায়গা খালি আছে।’ এ কথা বলার পর সুমাইয়া গালমন্দ করতে থাকে।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী আরও জানান, এ ঘটনার আধঘণ্টা পরে সুমাইয়ার একান্ত ছেলে বন্ধু লাঞ্ছিত শিক্ষার্থীদের ডেকে বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করেন। তাদের কথা বলার এক পর্যায়ে সুমাইয়া একটি দোকান থেকে তেড়ে এসে ভুক্তভোগী ছাত্রকে থাপ্পড় দেয় এবং উচ্চবাচ্চ করতে থাকে। তখন আশপাশের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে সুমাইয়াকে নিবৃত্ত করতে চাইলে সে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকলে প্রক্টরিয়াল টিম উভয়পক্ষকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে লিখিত সাক্ষ্য নেয়।

ভুক্তভোগী ছাত্র বলেন, এটি সত্যিই লজ্জার ও দুঃখজনক ঘটনা। আমার বান্ধবীসহ প্রিন্টের কাজে যাচ্ছিলাম। তখন মেয়েটি উচ্চস্বরে সাইড চাইলে আমি বলি- আপু রাস্তার তো ৭০ ভাগ জায়গাই খালি আছে। এই কথার প্রেক্ষিতে সে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। কিন্তু পরে তার বয়ফ্রেন্ড বিষয়টা সমাধান করতে ডাকলে মেয়েটি হঠাৎ করে আমাকে ধাপ্পড় মেরে বসে।

এ বিষয়ে সুমাইয়া বিনতে ইকরাম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, রাস্তায় সাইড চাইলে তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি করে ও আমাকে নেশাগ্রস্ত বলে সম্বোধন করে। তখন আমি এর প্রতিবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় থাপ্পড় ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করায় সুমাইয়াকে এক বছর ও গালিগালাজ করা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় অনিকা তাবাচ্ছুম মিমকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তারা দুজনই এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বিরত থাকবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker