শিক্ষা

জাফর ইকবালের যে কথায় ১ সপ্তাহের অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনের ১৩ম দিনে ও অনশনের দীর্ঘ ১৬২ ঘণ্টার বেশি সময় পর বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড: মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাতে অনশন ভেঙেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত ২৮ শিক্ষার্থী। আজ বুধবার সকালে সস্ত্রীক ক্যাম্পাসে এসে পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ৭ দিনের অনশন ভাঙান শাবিপ্রবির এই সাবেক শিক্ষক।

এসময় ড: জাফর ইকবাল বলেন, আমি সংকল্প করে এসেছি তোমাদের অনশন ভাঙিয়ে তারপর আমি সিলেট ছাড়ব। আমি চাই তোমরা আন্দোলন চালিয়ে যাও, তবে অনশন ভেঙে আন্দোলন করো।

আন্দোলন আর অনশন ভিন্ন জিনিস! আমি এসেছি তোমাদের অনশন ভাঙাতে। পরে সকালে শিক্ষার্থীরা তার হাতে পানি পান করে অনশন ভাঙেন।

Mission 90

এর আগে অনশনকারীদের উদ্দেশে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘তোমরা কেন তোমাদের জীবন অপচয় করবা? তোমাদের বেঁচে থাকাটা বেশি জরুরি। তোমরা তো এরই মধ্যে বিজয়ী হয়েছ। সারা দেশের মানুষ তোমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের ঘুম হারাম করে দিয়েছ।’

তিনি আরো বলেন, তোমরা জানো না কত বড় আন্দোলন তোমরা করেছ। এখন সব বিশ্ববিদ্যালয় কাঁপছে। তোমরা যেটা চেয়েছ, সেটা পাবে। এটা তোমাদের ক্যাম্পাস। তোমরা যেভাবে সাজাতে চাও, এই ক্যাম্পাস সেভাবে সাজানো হবে। কিন্তু এখন অনশন ভাঙতে হবে। তোমাদের আন্দোলনের কারণে ৩৪ জন ভাইস চ্যান্সেলরের ঘুম নেই। তোমরা অনশন না ভাঙলে আমিও যাব না। এখানেই থাকব। তোমাদের না খাইয়ে আমি যাব না।

Mission 90

জীবন অনেক মূল্যবান, তুচ্ছ বিষয়ে জীবন অপচয় করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তারা বাসায় এসেছিল। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যা চাও, যে দাবি তোমাদের সেটা পূরণ হবে। তোমাদের উসিলায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে।’

বুধবার ভোর রাত ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান জাফর ইকবাল দম্পতি। পরে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কাছে যান। প্রিয় শিক্ষককে কাছে পেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা নিজেদের জমে থাকা ক্ষোভ, অভিযোগের কথা তুলে ধরেন তাদের কাছে। উপাচার্য়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানান। জাফর ইকবাল দম্পতি দীর্ঘ সময় ধরে তাদের কথা শুনেন।

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থের জন্য আমার কাছে একটা লেখা চাওয়া হয়েছিল। সেই লেখাটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়েছে। আমি এই সম্মানীর টাকাটা নিয়ে এসেছি। এই আন্দোলনের ফান্ডে টাকাটা দিচ্ছি। তোমরা রাখো। এবার পারলে আমাকে অ্যারেস্ট করুক।’

এরপর মুহম্মদ জাফর ইকবাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker