হবিগঞ্জ

ওসি-এসআইসহ ৪ পুলিশকে কোপানোর ঘটনায় সন্ত্রাসী মুছা কারাগারে

নবীগঞ্জ থানার ওসি-এসআইসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার দায়েরকৃত মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহ সোহান আহমেদ মুছাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালত। গত ৩০ ডিসেম্বর আমল আদালত-৫-এ হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলাহাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। সন্ত্রাসী মুছা জেলহাজতে খবরে ছড়ালে এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে।

২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহ সোহান আহমেদ মুছাকে গ্রেপ্তার করতে যায় পুলিশ। এ সময় মুছা ও তার সঙ্গীদের নিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে তৎকালীন নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাশ (৪০), এসআই ফখরুজ্জামান (৩৫) ও দুই কনস্টেবলকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উত্তম কুমার দাশকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তৎকালীন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।

এ ঘটনা ঘটনার দিন; রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুছার বোনসহ ৪ জনকে আটক করে। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সন্ত্রাসী মুছা পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়। প্রায় ২ বছর আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করে সে গত বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) কালো রংয়ের একটি কারযোগে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল আদালত-৫ এ হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ শুনানী শেষে সন্ত্রাসী মুছাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

সূত্রে জানা যায়, এর আগে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথবাহিনী সন্ত্রাসী মুছার পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে। প্রায় ২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মুছাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় যৌথবাহিনী। এ সময় মুছার স্বীকারোক্তিতে ৫৬৭ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

যেভাবে দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে মুছা

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা হেভেন। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন মুসা। উক্ত হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই চরম বেপরোয়া হয়ে ওঠে মুছা। এরপর থেকে সে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নবীগঞ্জ শহরসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

সম্প্রতি সে দিনে-দুপুরে নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের হীরা মিয়া গালর্স স্কুলের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্র দেখিয়ে ৩টি দোকানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটসহ ৩টি মোটর সাইকেল ও ৭ লাখ টাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর বিকেলে মুছা শ্রমিক নেতা হেলাল আহমদের বাড়ির সীমানায় বেড়া দিয়ে ওই পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই সুজিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে মুছা ও তার পরিবারের সদস্যদের রোষানলে পড়ে। একপর্যায়ে মুছাকে গ্রেপ্তার না করে ফিরে আসতে বাধ্য হয় পুলিশ। এভাবেই নবীগঞ্জে শহরে মুছার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায় সে।

এছাড়া রোড ডাকাতি, ইয়াবা ব্যবসাতেও সংশ্লিষ্টতা ছিল মুছার। সে জেলহাজতে যাওয়ার খবরে শহরবাসীসহ এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। আবার জামিনে ছাড়া পায় কিনা সে আঙ্কও রয়েছে সবার মনে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker