গাজীপুর

কালিয়াকৈরে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে সরকারী ঘর বিক্রী ও ভাড়া দেয়ার অভিযোগ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রধানমন্ত্রীর  কার্যালয়ের বরাদ্ধকৃত আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের জন্য নির্মিত কয়েকটি ঘর বিক্রী ও ভাড়া দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। নিয়মবহির্ভূত ভাবে তার নিজস্ব লোকদের নামে এসব ঘর বরাদ্ধ নেওয়া প্রায় প্রতিটি ঘরই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে সরকারী এসব ঘরগুলো এখন মাদকসেবী, অপরাধীদের ও বন্য জীবজন্তুর আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে “আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” শ্লোগানকে সামনে রেখে সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষে এ প্রকল্পের  আওতায় কালিয়াকৈর পৌরসভার ৪নং ওর্য়াডে ১২টি ঘর নির্মাণ করা হয় এবং এসব প্রতিটি ঘর নির্মাণ ব্যায় বাবদ ১ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম তার কর্মচারীসহ  নিজস্ব লোকের নামে জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে সবগুলো ঘর অন্য লোকের জমি, রেলওয়ের জমি ও বনের জমিতে নির্মাণ করে। বরাদ্ধকৃত ব্যক্তিদের মালিকানা জমিতে ঘর করার কথা থাকলেও অধিকাংশ ঘর অন্যের জমিতে উঠানো হয়েছে। এসব ঘরগুলোর মধ্যে  নিজের জমি না থাকায় বক্তারপুর গ্রামের অসহায় ইয়াকুব আলীর ঘর পার্শ্ববতী জানেরচালা গ্রামের সোলাইমানের বাড়ীতে নিয়ে নির্মাণ করা হয়। কিছুদিন পরে কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম জমির মালিক সোলাইমানের নিকট ইয়াকুবের ঘরটি বিক্রী করে দেয়। ওই টাকা দিয়ে ইয়াকুবকে বনের জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয়। দীর্ঘ ৫ বছরেও ওই ঘর বিক্রির টাকা কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম না দেওয়ায় অসহায় ইয়াকুব আলী এখন গৃহহীন হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন পরিবার নিয়ে অন্যের ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাচলক্ষী এলাকায় দুটি ঘর রেলওয়ের জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে এখন জীবজন্তু বাস করছে। কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম তার দোকানের কর্মচারী মিলন মিয়ার নামে ঘর বরাদ্ধ নিয়ে সরকারী বনের জমিসহ নিজের জমিতে উঠিয়েছে। ওই ঘর ভাড়া দিয়ে কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম প্রতিমাসে ৭ শত টাকা ভাড়া আদায় করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ১২টি ঘরের মধ্যে ২টি  ঘরের অস্তিত্ব  খুজে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী ইয়াকুব আলী জানান, সাইফুল আমার  সরকারী ঘরডা বেইচা দিছে, ঘরের ট্যাহা ৫ বছরেও হাতে পাই নাই। দেহা অইলে সাইফুল অহন কতা কয় না। পোলা মাইয়া নিয়া অন্যের ঘরে কষ্ট কইরা থাকি।

পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান জানান, ২১০টা ঘরের মধ্যে ৫ থেকে ১০টা ঘর এদিক সেদিক হতে পারে এটা অস্বাভাবিক নয়। ঘরগুলো মানুষের বসবাসের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বিক্রী ও ভাড়া দেওয়ার জন্য নয়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker