অর্থনীতি

প্রবাসী আয় বাড়াতে শিগগিরই আসছে বিশেষ প্যাকেজ

বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ শক্তিশালী করতে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ও সঞ্চয়ের ওপর বাড়তি সুদ দেয়াসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার।

এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা যাচাই বাছাই করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ব্যাংকাররা বলছেন, এমন উদ্যোগ নেয়া হলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়বে।

দালাল ধরে সাত লাখেরও বেশি টাকা খরচ করে ২১ বছর না হতেই বড় ছেলেকে সৌদি আরব পাঠান মানিকগঞ্জের মঞ্জিলা বেগম। আরেক ছেলে পড়ে স্থানীয় মাদ্রাসায়।

মঞ্জিলা বেগম জানান, অভাবের সংসারে ছেলের বৈদেশিক আয়ই তার সম্বল। এমন কোটি মঞ্জিলা বেগমের ছেলেদের পাঠানো বৈদেশিক আয় দেশেরও সম্বল।

বৈধ পথে পাঠানো প্রবাসী আয়ে যেমন মঞ্জিলাদের সংসার চলে তেমনি চলে দেশের অর্থনীতিও। কিন্তু শঙ্কার কথা হলো কমছে বৈদেশিক আয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের উৎস বেশির ভাগ দেশ থেকেই রেমিট্যান্স আসা কমেছে।

গত জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে প্রবাসী আয় কমেছে আগের বছরের থেকে ২১ শতাংশ। একই অবস্থা সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ওমানসহ অন্যান্য দেশের।

গত অর্থবছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা প্রবাসী আয় কমেছে ১৫ শতাংশ। ওমান থেকে কমেছে ৪১ শতাংশ এবং কুয়েত থেকে কমেছে ১০ শতাংশ।

মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর থেকে রেমিট্যান্স আসা কমেছে ৩৮ শতাংশেরও বেশি। জুলাইয়ে শুরু হওয়া চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ আরো বেশি নিম্নমুখী।

সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। অথচ আগস্টেও সেখান থেকে ৩০ কোটি ডলার এসেছিল।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে প্রবাসীদের বিদেশযাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ার কথা, সেখানে উল্টো দিন দিন কমে আসছে রেমিট্যান্স।

ব্যাংককাররা বলছেন, প্রবাসীরা ঠিকই স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠাচ্ছেন। তবে ব্যাংকিং চ্যানেলে না পাঠিয়ে তারা পাঠাচ্ছেন হুন্ডিতে। এর জন্য তারা দুষছেন দেশের অস্থির ডলার বাজারকে।

এই অবস্থায় প্রবাসীদের জন্য বিশেষ স্কিমের কথা ভাবছে সরকার। যেখানে বর্তমানের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি বাধ্যতামূলক সঞ্চয় স্কিম চালু, ঋণ পাওয়া সহজ করা এক ছাদের নিচে সব সেবাসহ নানা সুবিধা রেখে একটি বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।

এমন পদক্ষেপকে সময়োপযোগী বলছেন বিশ্লেষকরা। ব্যাংকিং চ্যানেলের সাথে খোলাবাজারে ডলারের যে ব্যবধান তা কমিয়ে আনার ব্যাপারেও কার্যকরী পদক্ষেপ চাইছেন তারা।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker