ফুটবল

নেপালকে হারিয়ে শিরোপা উৎসব বাংলাদেশের

যুব সাফে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও ঘরে তুলল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে বাংলাদেশ। গোল করেছেন শাহেদা আক্তার রিপা, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও উন্নতি খাতুন।

প্রথমবারের মতো হওয়া এই টুর্নামেন্টেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাজিমাত করল বাংলাদেশ। এর আগে যুব সাফে দুইবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০২১ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ ছাড়া কিশোরীদের আসর অনূর্ধ্ব-১৫ সাফেও একবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ, সেটা ২০১৭ সালে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে নেপাল থেকে মূল সাফের শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। সাবিনা-কৃষ্ণাদের সাফল্যে বয়সভিত্তিক দল নিয়ে প্রত্যাশা বেড়ে যায়। সেই প্রত্যাশা ভালোভাবেই পূরণ করে দেখিয়ে দিলেন শামসুন্নাহাররা।

প্রতিশোধের নেশায় মাঠে নামা নেপালকে শুরু থেকেই চাপে রাখে স্বাগতিক মেয়েরা। সুযোগও তৈরি করে কয়েকবার কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়ায় গোল পাচ্ছিল না শামসুন্নাহাররা। অবশেষে প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে নেপালের রক্ষণ ভাঙতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। পর পর দুটি গোল করে চালকের আসনে বসে মেয়েরা। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত ছিল নেপাল। এ অর্ধে এক গোলের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

চোট থাকায় ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে বিশ্রাম পেয়েছিলেন সোহাগী কিসকু ও মাহফুজা খাতুন। তিন দিনের বিশ্রাম শেষে ফাইনালের একাদশে ফেরেন দুজনেই। একাদশের বাইরে আইরিন খাতুন ও উন্নতি খাতুন। কমলাপুর স্টেডিয়ামে খেলা শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই এসেছিল গোলের সুযোগ। নেপালি গোলরক্ষক কবিতা বল বিপদমুক্ত করতে না পারায় উন্মুক্ত পোস্টে শট নিয়েছিলেন আকলিমা খাতুন। তবে নেপালের ভাগ্য ভালো, শট লক্ষ্যে থাকেনি। ১৮তম মিনিটে শামসুন্নাহারের বাড়ানো বলে বক্সে আড়াআড়ি পাস বাড়ান রিপা, সেখানে আকলিমার শট ঝাঁপিয়ে আটকান গোলরক্ষক কবিতা। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল গ্লাভসে নেন তিনি।

৩৬তম মিনিটে প্রথমবার গোছাল আক্রমণে ওঠে নেপাল। বাম প্রান্ত থেকে মমতা পুনের ক্রসে শরীর ঘুরিয়ে আমিশা কার্কির শট চলে যায় পোস্টের পাশ ঘেঁষে। পরের মিনিটেই পালটা যায় বাংলাদেশ। বক্সের কোণা থেকে শাহেদা আক্তার রিপার গতির শট দূরের পোস্ট দিয়ে বাইরে চলে যায়। সেখানে আকলিমা ও শামসুন্নাহার কেউই ছুটে গিয়েও বলের নাগাল পাননি।

অবশেষে ৪২তম মিনিটে রিপার দারুণ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া আকলিমাকে আটকালেও নেপালের ডিফেন্ডার কুমারি তামাং দুর্বল শটে বল তুলে দেন রিপার পায়ে। ফাঁকা পোস্টে বল জড়ান এই ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করার আনন্দে মেতে ওঠে গ্যালারি। রিপার লম্বা ক্রস ক্লিয়ার করতে পারেননি নেপালের দুই ডিফেন্ডার। ফাঁকায় বল পেয়ে কিছুটা এগিয়ে নিখুঁত শটে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন শামসুন্নাহার।

৫৬তম মিনিটে সতীর্থের লম্বা পাস আগুয়ান গোলরক্ষক পাওয়ার আগেই শট নেন শামসুন্নাহার কিন্তু তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ৭৯তম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পোস্ট ছেড়ে বাইরে এসে দারুণ দক্ষতায় বল গ্লাভসে নেন কবিতা বিকে। ৮৭তম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করে ফেলে বাংলাদেশ। রিপার ফ্রি কিকে দূরের পোস্টে পা লাগিয়ে অনায়াসে জালে পাঠান উন্নতি খাতুন। এই গোলে শিরোপা জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker