এই সময়ে ইউরোপের ক্লাবগুলোর অবস্থা যেমন রমরমা, তখন খুব একটা তেমন ছিল না। তবু সারা বিশ্বের ফুটবলাররাই চাইতেন ইউরোপের কোনো ক্লাবে খেলতে। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল পেলে। সদ্যঃপ্রয়াত ব্রাজিলের ফুটবল কিংবদন্তি ২২ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন নিজ দেশের ক্লাব সান্তোস আর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক কসমসে।
কিন্তু কেন তিনি কখনোই ইউরোপের কোনো ক্লাবে খেলেননি?
ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জেতা পেলেকে ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ’ ঘোষণা করেছিল দেশটির সরকার। এর ঠিক এক বছর আগেই ১৯৬১ সালে পেলেকে মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনতে চেয়েছিল জুভেন্তাস। ওই সময় হাতে গোনা কয়েকজন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার জুভেন্টাসে খেলতেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ইয়ানিও কুয়াদ্রোস কর্তৃক রাষ্ট্রীয় সম্পদ ঘোষিত হওয়ার পর তিনি আর অন্য দেশের ক্লাবের বিক্রিযোগ্য ছিলেন না। নিজ দেশেই কাটিয়ে দেন প্রায় পুরো ক্যারিয়ার।
২০০৫ সালে ‘ফোরফোরটু’ ম্যাগাজিনে এক সাক্ষাৎকারে ইউরোপের ক্লাবে না খেলা প্রসঙ্গে পেলে বলেছিলেন, ‘ইউরোপ থেকে অনেক প্রস্তাব আসত। তবে সান্তোসেই আমার ভালো লাগছিল। ওই সময়ের সঙ্গে এখনকার পার্থক্য হচ্ছে, তখন এত টাকা-পয়সা দিত না যে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা যাবে না। আমার ক্যারিয়ারের শেষ দিকে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে চমৎকার একটা প্রস্তাব এসেছিল। জুভেন্টাস থেকে জিওভানি আগনেলি আমাকে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফিয়াটের শেয়ার দিতে চেয়েছিল। ‘
বর্তমান সময়ের ফুটবলারদের সমালোচনা করে পেলে বলেছিলেন, ‘তখন ব্রাজিল থেকে তিন–চারজন খেলছিল ইউরোপে। আমি আসলে ক্লাব বদলাতে চাইনি। আমি তো এখনকার ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের দেখি, ওরা ক্লাবের জার্সি পরে ব্যাজে চুমু খেয়ে বলে “আমি ম্যানচেস্টারকে ভালোবাসি”। পরের বছর ক্লাব বদলে বলে “আমি রোমাকে ভালোবাসি”। ওরা আসলে ক্লাব নয়, টাকা ভালোবাসে। একটা সময়ে সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, টাকা না দল ভালোবাসব? আমি সান্তোসে ভালো ছিলাম। ‘