ক্রিকেট

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দাপটে এশিয়া কাপের মিশন শেষ টাইগারদের

২ উইকেটে হেরে বিদায় নিল বাংলাদেশ। শেষ ওভার, মেহেদী হাসান, প্রয়োজন ৮ রান।

প্রথম বল, লেগবাই থেকে সিঙ্গেল। দ্বিতীয় বল, ফার্নান্ডোর চার। তৃতীয় বল, ডাবলস। স্কোর টাই। সেটি আবার নো বল। খেলা শেষ তাতেই! 

দুবাইয়ে রাতটা শ্রীলঙ্কার। ২ উইকেটের জয়ে সুপার ফোরে আফগানিস্তানের সঙ্গী তারাই। বিদায় নিল বাংলাদেশ।
তাসকিন তোপে শ্রীলংকা চাপে

অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট অব আ লেংথের বলে জায়গা বানিয়ে স্ল্যাশ করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ তুলেছিলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। মেহেদী হাসান ভুল করেননি, শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে ষষ্ঠ উইকেট। নিজের শেষ ওভার করতে এসে দ্বিতীয় উইকেট পেলেন তাসকিন। 

২৭ বলে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন ৪৫ রান।

অবশেষে আউট মেন্ডিস, উইকেট পেলো ফিজ

জুটি ভাঙার প্রয়োজন ছিল, সাকিব আনলেন তাঁর বড় অস্ত্র মোস্তাফিজকে। মোস্তাফিজ বের করে আনলেন তাঁর ক্ল্যাসিক স্লোয়ার। শর্ট লেংথের বলটিকে থার্ডম্যানে পাঠাতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস, সফলও হন। তবে ছুটে এসে আরেকটি ভালো ক্যাচ নিয়েছেন তাসকিন। চার বার বেঁচে যাওয়া মেন্ডিস অবশেষে ফিরেছেন ৩৭ বলে ৬০ রান করে।

১০০ পাড় শ্রীলংকার, এবার চাপে বাংলাদেশ

ইবাদত হোসেনের ১৪১ কিলোমিটার গতির ডেলিভারিতে দাসুন শানাকার ৮৪ মিটার লম্বা ছক্কায় শ্রীলঙ্কার রান একশ স্পর্শ করল ১২.১ ওভারে। পরের বলেই আরেকটি দারুণ ছক্কা মারলেন লঙ্কান অধিনায়ক।

ইবাদতের তিন উইকেটে চাপে শ্রীলংকা

নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আবারও উইকেটের দেখা পেয়েছে ডেবুটান ইবাদত। এবার তাঁর শিকার দানুশকা গুনাতিলাকা। স্লো বাউন্সারে তুলে মারতে গিয়ে টপ এজড হয়েছিলেন গুনাতিলাকা, বল উঠেছিল বেশ ওপরে। ফাইন লেগ থেকে অনেকটা ছুটে এসে, ক্যাচের নিচে নিজেকে প্রস্তুত করে, মুশফিককে থামিয়ে ক্যাচটি নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। সাজঘরে ফিরেছেন গুনাতিলাকা।

অভিষেকে প্রথম ওভারেই ইবাদতের জোড়া আঘাত

টি-২০তে অভিষেকের প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে মারকুটে শ্রীলংকাকে চাপে ফেলেছে বাংলাদেশ। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে একে একে নিসাঙ্কা এবং আলাসাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান এই পেসার। ছয় ওভার শেষে লঙ্কাদের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ৪৯ রান।নিসাঙ্কা ফিরেছেন ১৯ বলে ২০ রান করে। ৪৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে ৪৮ রানে। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভার করতে এসে ইবাদত ৪ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেট। 

শেষে তাসকিন মোসাদ্দেক ঝড়ে লঙ্কার টার্গেট ১৮৪

ম্যাচের শেষদিকে যখন সব সেট ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ, তখনই তুরুপের তাসের মতো মোসাদ্দেকের সাথে জ্বলে উঠলেন তাসকিন। এই দুই টেলঅডারের ব্যাটিং ঝড়ে শেষপর্যন্ত ১৮৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। দুই দলেরই বাঁচা-মরার এই ম্যাচ জিততে হবে সাকিব মুস্তাফিজদের বলের বিপক্ষে ১৮৪ রানের বিশাল টার্গেট শ্রীলংকার। 

কাভারে মিসফিল্ডের কারণে চার পাওয়া মোসাদ্দেক দারুণ এক স্ট্রেইট ড্রাইভে মারলেন আরেকটি চার। শেষ বলে ২ রানে বাংলাদেশ পৌঁছাল ১৮৩ রানে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ স্কোর। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ১৮০ পেরোল বাংলাদেশ।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১৮০ রান তাড়া করে জয়ের কীর্তি নেই একটিও।

২০১৬ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১৭৯ রান তাড়ায় আফগানিস্তানের ৫উইকেটের জয় এই মাঠের রেকর্ড।

ভাঙলো আশা জাগানো আফিফ মাহমুদুল্লাহ জুটি

আফিফের উইকেটের ৩ বল পরেই যেন সঙ্গীর পথ ধরলেন মাহমুদুল্লাহ। ২২ বলে ২৭ রান করে ফিরে গেলেন সাজঘরে। এর আগে
আফিফের উইকেটের মধ্য দিয়ে ভাঙে ৩৭ বলে ৫৭ রানের আফিফ-মাহমুদুল্লাহ জুটি। ১৬ ওভার চার বলে দলীয় ১৪৪ রানের সময় ২২ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন আফিফ। আউট হওয়ার আগে চারটি ৪ ও দুইটি ছয় হাঁকান এই ব্যাটসম্যান।

সাকিবকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

তিনটি বাউন্ডারিতে ২২ বলে ২৪ রান করে তিকশানাকের বলে বোল্ড হলেন কাপ্তান সাকিব। শুরুতে চাপে ছিলেন, এরপর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সেটি সামাল দেওয়ার। তবে তাঁর উইকেটে আবার চাপে পড়ল বাংলাদেশ। 

১১তম ওভারে বোলিং শেষ করলেন তিকসানা। ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ১ উইকেট তাঁর। বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ৮৯ রানে ৪ উইকেট।

ম্যাচের ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৫ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। 

সাকিবের ডাবল

মাহিস থিকশানার বলে স্কুপ করে বাউন্ডারিতে সাকিব পা রাখলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৬ হাজার রানে। সঙ্গে পূর্ণ করলেন একটি ডাবলও। এই রানের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতে ৪১৯ উইকেটও আছে তার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৯ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে) ৬ হাজার রান ও ৪০০ উইকেটের ডাবল আছে আর কেবল ডোয়াইন ব্রাভোর।

পারলেন না মুশফিক

অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম পারলেন না বাংলাদেশের ইনিংস এগিয়ে নিতে। আউট হলেন তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে।

চামিকা করুনারত্নে শরীর তাক করে লেংথ বল করেন। একটু স্কিড করা বলটিকে কিপারের পাশ দিয়ে থার্ড ম্যান দিয়ে খেলার চেষ্টা করেন মুশফিক। কিন্তু বল তার ব্যাটের কানায় লেগে যায় কিপারের গ্লাভসে।

ম্যাচের ৮ম ওভারে বাংলাদেশের রান ৬৩ থাকতে ৫ বলে ৪ রান করে আউট মুশফিক। 

মিরাজের বিদায়

প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই শ্রীলঙ্কাকে কাঙ্ক্ষিত উইকেট এনে দিলেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা। স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

হাসারাঙ্গার ঝুলিয়ে দেওয়া গুগলিতে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন মিরাজ। কিন্তু সোজা ব্যাটে না খেলে তিনি চেষ্টা করেন ক্রস ব্যাটে সুইপের মতো কিছু একটা করার। ব্যাটে-বলে হয়নি। বল চোবল দেয় স্টাম্পে।

টি-২০তে ২৬ বলে ৩৮ রানের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে ৬.৫ ওভারে দলীয় ৫৮ রানে আউট মিরাজ। 

মিরাজের ব্যাটিং নৈপুণ্যে পাওয়ার প্লেতে শক্ত ভিত

ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের ২৪ বলে ৩৮* রানের ইনিংসে পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রানের শক্ত ভিত পেয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজের সাথে ক্রিজে আছে কাপ্তান সাকিব আল হাসান। ৭ বলে পাঁচ রান করেছেন তিনি। 

প্রত্যাবর্তনে অনুজ্জ্বল সাব্বির রহমান, ফিরলেন পাঁচ রানে

বহুকাল পরে দলে ফিরেও অনুজ্জ্বল রয়ে গেলেন সাব্বির রহমান। ম্যাচের তৃতীয় ওভারে ফার্নেদোর পঞ্চম বলে অজ হয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাব্বির। দলীয় ১৯ রানে সময় ৬ বলে পাঁচ রান করে বিদায় নেন সাব্বির রহমান। ব্যক্তিগত ইনিংসের প্রথম বলটি এক অনন্য স্কুপে চার মেরে শুরু করেছিলেন সাব্বির। তিন ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ এক উইকেট হারিয়ে ১৯ রান।

দলে তিন পরিবর্তন, টসে হেরে ব্যাংটিয়ে বাংলাদেশ

এশিয়া কাপে বাঁচা মরার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাশুন শানাকা। টস জিতলে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবও আগে ফিল্ডিং করতেন বলে জানিয়েছেন। 

আগের ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় মূলত ডুবতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে একাদশে  তিন বদল এনেছে দল। নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়কে বসিয়ে ওপেনার হিসেবে খেলানো হচ্ছে মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে। আর পেসার এবাদত দলে ঢুকছে সাইফুদ্দিনের জায়াগায়।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।

দুই দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানদের সাথে হেরেছে। শ্রীলঙ্কা উদ্বোধনী ম্যাচে হেরেছে ৮ উইকেটে। বাংলাদেশ আফগানদের সাথে হেরেছে ৭ উইকেটে। আজকের ম্যাচে কোন দল এগিয়ে? বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা বেশি নাকি শ্রীলঙ্কার? 

টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের সাম্প্রতিক যে পরিসংখ্যান, তাতে কাউকেই ‘ভালো’ বলার উপায় নেই। দুই দলের মধ্যে বরং কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। চলতি টুর্নামেন্টে উভয়েরই শুরু হয়েছে আফগানিস্তানের কাছে হার দিয়ে। দুই দলেরই টি-টোয়েন্টিতে অবস্থা যাচ্ছেতাই।

শ্রীলঙ্কা তাদের সর্বশেষ ১৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ১০টিতেই হেরেছে। বাংলাদেশ তো হেরেছে সর্বশেষ ১৬ টি-টোয়েন্টির মধ্যে ১৪টিতেই। সর্বশেষ ৫ ম্যাচ হিসেবে আনলে দুই দলেরই হার চারটি করে, জয় একটি।

মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য লঙ্কানরা এগিয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ ১২ টি-টোয়েন্টির ৮টি জিতেছে তারা। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে আবার এগিয়ে টাইগাররা। লঙ্কানদের সঙ্গে সর্বশেষ তিন দেখায় দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের স্কোয়াড:  সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মাহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন, নাঈম শেখ, তাসকিন আহমেদ। 

শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড: দাশুন শানাকা (অধিনায়ক), ধানুশকা গুনাথিলাকা, পাথুন নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালাঙ্কা, ভানুকা রাজাপাকশা, অ্যাশেন বান্দ্রা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহেশ থিকসানা, জেফারি ভ্যানিডারসি, প্রবীন জয়াবিক্রমা, দুশমান্তা চামিরা, বিনুরা ফার্নান্দো, চামিকা করুনারত্নে, দিলশান মাদুশকানা, মাথিসা পাথিরানা, দীনেশ চান্দিমাল, নুয়াইনদু ফার্নান্দো, কাসুন রাজিথা। 

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker