ক্রিকেট

‘স্বয়ং বিধাতা আসলেও মিরপুরে উন্নতি সম্ভব না’

বাংলাদেশ ক্রিকেটের বেশির ভাগ ম্যাচই হয় মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আন্তর্জাতিক থেকে শুরু করে ঘরোয়া লিগের ম্যাচ, কিছু থেকেই রেহাই নেই মিরপুরের ‘হোম অব ক্রিকেট’-এর। নিজেদের ঘরের মাঠ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নিজেরাও ভোগেন মিরপুর জুজুতে।

এর জন্য প্রধানত দায়ী করা হয়ে থাকে মিরপুরের পিচ কিউরেটরের প্রধান গামিনি ডি সিলভাকে। তবে বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব উল আনাম দায়ী করতে চাইছেন না গামিনিকে। বরং জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এমন অবস্থা মিরপুরের পিচের। স্বয়ং বিধাতা আসলেও মিরপুর জুজু কাটানো সম্ভব বলে মনে করেন না তিনি।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এমনটাই জানিয়েছেন মাহবুব উল আনাম। তিনি বলেন, ‘বছরে দেশে তিন হাজার খেলা হয়। মিরপুরের মতো স্টেডিয়ামে ৬০ দিনের বেশি খেলা উচিত না। সেখানে জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১২০ দিন খেলে ফেলেছি আমরা। স্বয়ং বিধাতা এসেও আমার মনে হয় না… (উন্নতি সম্ভব)।’

বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির এই চেয়ারম্যান মনে করছেন, মিরপুরের সমালোচনা না করে বরং এই মাঠ থেকে পাওয়া জয়ের ইতিহাস নিয়ে ভাবলেই বা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজলে সমালোচনাগুলো ভালো শোনাবে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘দায়টা (মিরপুর জুজু) আমিই নিবো। দায়টা আমাদের বোর্ড হিসেবে নেওয়া উচিত। কারণ, বোর্ড যেভাবে পরিচালিত হয়েছে এই চার মাসে; আপনারা যদি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে দোষারোপ করেন, আমার মনে হয় এটা খুবই অন্যায় হবে।

কারণ এই মাঠে আমাদের যে জয়গুলো আছে সেগুলোর জয়ের মালা আছে সেটা বোর্ডই নিই। আমরা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিকে টেস্টে হারিয়েছি। নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ তে হারিয়েছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ… সব দলকে হারিয়েছি।

আমাদের যে সমালোচনা হয়, সেটা অজ্ঞতার কারণে হয়। যদি আমরা বৈজ্ঞানিক কারণ খোঁজার চেষ্টা করি, তাহলে অনেক কিছু আমাদের ভালো শুনাবে।’

আশার বিষয় হচ্ছে, মিরপুরের উপর নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনায় আছে বিসিবি। তাই ঢাকা থেকে শুরু করে পুরো বাংলাদেশে নতুন ২০টি স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা বিসিবির।

বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব উল আনাম আরও যোগ করেন, ‘আমরা একটা মাস্টারপ্ল্যান করছি। প্রত্যেকটা অঞ্চলে আমাদের একটা ভালো স্পোর্টিং ফ্যাসিলিটি থাকবে। যেটাতে খেলার বাইরে অনুশীলন ও একাডেমি থাকবে। মিরপুরে আরও উইকেট বানাবো এবং রাজশাহী, বগুড়াকে আমরা পুরোপুরিভাবে আপগ্রেড করতে চাই। পূর্বাচলে দুটো মাঠ করবো। এর বাইরে মিরপুর আর বিকেএসপি তো আছেই। তার বাইরে ঢাকার বাইরে দুটো মাঠ করার জন্য এর আশেপাশে জায়গা ক্রয় করা…।

মিরপুরে বাড়ানো হচ্ছে পিচ। ঢাকায় বাড়ছে মাঠ, চেষ্টা চলছে ঢাকার বাইরেও। ইতোমধ্যে সে লক্ষ্যে কাজ করছে বিসিবি। আমরা মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবে রাজশাহী এবং খুলনায় সার্ভে করবো।

সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম প্রত্যেকটা জায়গায় একটা করে মাঠ তো আমাদের আছে। তার বাইরে আরেকটা জমি কেনা। সব অঞ্চলে আমাদের দুটো করে আন্তর্জাতিক মাঠ না থাকলে আমাদের এত খেলা পরিচালনা করা সম্ভব না।’

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker