ক্রিকেট

তাসকিনের জোড়া আঘাতে চাপে প্রোটিয়ারা

সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও ইয়াসির আলী রাব্বির করা তিন ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে রেকর্ড পুঁজিই পেয়েছে বাংলাদেশ। সে পুঁজি নিয়ে লড়াইয়ে নেমে বল হাতেও টাইগারদের শুরুটাও দারুণ। তাসকিন আহমেদের জোড়া আঘাতে স্বাগতিকদের দারুণভাবে চেপে ধরেছে টাইগাররা।

শুক্রবার সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ ওভারে ৩ উইকেটে ৫৯ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ১৬ ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ১৭ রানে ব্যাটিং করছেন। জিততে হলে বাকি ৩৫ ওভারে এখনও ২৫৬ রান করতে হবে প্রোটিয়াদের।

বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটাও ছিল সাবধানী। দেখে শুনেই ব্যাট করছিলেন দুই ওপেনার কাইল ভেরেইনা ও ইয়ানেমান মালান। তবে বড় ক্ষতি করার আগে দলীয় ১৮ রানেই প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বলে মালানের (৪) ব্যাটের কানায় চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে। সামনের দিকে ঝুঁকে দারুণ নিচু হওয়া ক্যাচ লুফে নেন তিনি।

মালানকে হারানোর পর অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা নিয়ে দলের হাল ধরেন ভেরেইনা। তবে তাকেও বেশি দূর যেতে দেননি তাসকিন আহমেদ। নবম ওভারের প্রথম বলেই ফেরান ভেরেইনাকে। তার বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এ ওপেনার। ২৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি।

দ্রুত দুই ওপেনারের বিদায়ের ধাক্কা প্রোটিয়ারা সামলাতে না সামলাতে ফের আঘাত করেন তাসকিন। সে ওভারের চতুর্থ বলে খালি হাতেই ফেরান এইডেন মার্করামকেও। তার বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে সহজ ক্যাচ তুলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে। ফলে শুরুতেই স্বাগতিকদের চেপে ধরেছে টাইগাররা। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪২ রান তুলতে পারে দলটি।

এর আগে সাবধানী শুরুতে বাংলাদেশকে ভালো সংগ্রহের ভিত দেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন। সেটাকে কাজে লাগিয়ে রেকর্ড জুটি গড়ার পথে আগ্রাসী ফিফটি তুলে নেন সাকিব ও ইয়াসির। শেষদিকে ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩১৪ রান করে টাইগাররা।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ২৭৮ রান। ২০১৭ সালে কিম্বার্লিতে ওই পুঁজি পেয়েছিল টাইগাররা। তবে কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলার জোড়া সেঞ্চুরিতে ১০ উইকেটের বিশাল হারের তিক্ত স্বাদ নিতে হয়েছিল তাদেরকে।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা ওপেনার লিটন ৬৭ বলে করেন ৫০ রান। মারেন ৫ চার ও ১ ছক্কা। তিনে নেমে মাত্র ৭ চার ও ৩ ছক্কায় মাত্র ৬৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব। চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা তরুণ ইয়াসির স্বাদ নেন এই সংস্করণে প্রথম ফিফটির। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ বলে ৫০ রান করেন তিনি।

উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ও লিটন ১৩০ বলে যোগ করেন ৯৫ রান। ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাদের মাটিতে কোনো উইকেটে এত বড় জুটি আগে ছিল না বাংলাদেশের। তবে তাদের রেকর্ড ভাঙা পড়ে অল্প সময়ের ব্যবধানে। চতুর্থ উইকেটে কেবল ৮২ বলে ১১৫ রানের জুটি গড়েন সাকিব ও ইয়াসির।

প্রথম পাওয়ার প্লেতে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ তোলে মাত্র ৩৩ রান। দলীয় পঞ্চাশ আসে ১৬তম ওভারে। শুরুতে উইকেট ধরে রাখার কৌশলে সফল হয়ে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রানের চাকা দ্রুত ঘুরতে থাকে টাইগারদের। শেষ ১৪ ওভারে ৪ উইকেট খুইয়ে তারা স্কোরবোর্ডে জমা করে আরও ১৩৭ রান।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker