সিরিজ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের: পাল্লেকেলেতে হতাশাজনক হার
কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আশালঙ্কার দাপট; বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা ও ফিল্ডিংয়ের দুর্বলতা
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৯৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে সিরিজ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হলো বাংলাদেশের। কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আশালঙ্কার অসাধারণ ব্যাটিংয়ের পর লঙ্কান বোলারদের দাপটে বাংলাদেশের ২১৮ রানে গুটিয়ে যায়। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যর্থতা এবং বাজে ফিল্ডিং ছিল হারের মূল কারণ।
লেগস্পিনার বিতর্ক ও তানভীরের পারফরম্যান্স
শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সাংবাদিকরা শুরু থেকেই রিশাদ হোসেনকে না খেলানোর বিষয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। অভিষেক ম্যাচে তানভীর ইসলামের ভালো পারফরম্যান্স (৫ উইকেট) তাকে একাদশে জায়গা দিলেও, পাল্লেকেলের উইকেটে তিনি হতাশ করেছেন। প্রেমাদাসার মতো এই উইকেটে বল ঘোরেনি, যার ফলে তানভীর নড়বড়ে পাথুম নিশাঙ্কার উইকেটের বিনিময়ে ৬১ রান দিয়েছেন। লেগস্পিনারের বৈচিত্র্যের অভাবে বাংলাদেশের বোলিংয়ে ধার কম ছিল বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
ব্যাটিং বিপর্যয় ও ব্যক্তিগত অর্জন
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই বিপর্যয় দেখা যায়। ওপেনার তানজিদ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত দ্রুত উইকেট হারান। পারভেজ হোসেন ওপেনিংয়ে নেমে ২৮ রান করলেও ৬৩.৬৩ স্ট্রাইকরেটে তার ধীর গতি দলের ওপর চাপ বাড়ায়। ৬২ রানেই তিন টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে জয়ের আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়।
মিডল-অর্ডারে তাওহিদ হৃদয় ৭৫ বলে টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিলেও, এটি দলের সামগ্রিক ব্যর্থতাকে ঢাকতে পারেনি। পাল্লেকেলেতে একটি ৫০ রানের জুটিও হয়নি, যা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দুর্বলতাকেই তুলে ধরে।
বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের হতাশাজনক চিত্র
তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব শুরুতে উইকেট নিলেও কুশল মেন্ডিসের তাণ্ডবে লাইন-লেন্থ হারিয়ে ফেলেন বোলাররা। ফিল্ডিংয়েও বাংলাদেশের দুর্দশা ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্যাচ না পড়লেও গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে ছিল তেজহীনতা। বিশেষ করে মুস্তাফিজুর রহমানের ফিল্ডিংয়ে অনীহা স্পষ্ট ছিল, যা দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ‘শুভেচ্ছাদূত’ হিসেবে দলে খেলছেন। তার ফিল্ডিং নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর বিরক্তিও নজরে পড়েছে।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা দলের প্রশংসা প্রাপ্য তাদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের জন্য। ফর্মের তুঙ্গে থাকা কুশল মেন্ডিস ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তার সঙ্গে অধিনায়ক চারিথ আশালঙ্কা দীর্ঘ সময় সঙ্গত দিয়ে চতুর্থ উইকেটে ১২৪ রানের জুটি গড়েন, যা শ্রীলঙ্কাকে একটি শক্ত ভিত এনে দেয়। এরপর লঙ্কান বোলাররা তাদের কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন ধামাচাপা দেন।