এনসিপি নেতা মোতালেবকে গুলি: রাজনীতির আড়ালে মাদক ও চাঁদাবাজির তথ্য পেল পুলিশ
তন্বীর বাসায় ২ মাস ধরে বসবাস করতেন মোতালেব; গোলাগুলির সেই ‘মিথ্যা’ জবানবন্দি ফাঁস
খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) জানিয়েছে, এই হামলার সাথে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি; বরং মাদক ও চাঁদাবাজির অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে কেএমপি মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোতালেব শুরুতে সোনাডাঙ্গার রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার যে দাবি করেছিলেন, তা ছিল ভিত্তিহীন। তদন্তে দেখা গেছে, তিনি সোনাডাঙ্গার আল-আকসা মসজিদ রোডের ‘মুক্তা হাউস ১০৯’ এর নিচতলায় তার নারীসঙ্গী তন্বীর বাসায় গুলিবিদ্ধ হন। গত দুই মাস ধরে তিনি সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।
পুলিশের উদ্ধারকৃত আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ:
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ পাঁচটি বিদেশি মদের খালি বোতল, পিস্তলের গুলির একটি খোসা এবং ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার আগের রাতে দুজন ব্যক্তি মোতালেবের ওই বাসায় প্রবেশ করেন। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মোতালেব খুলনার কুখ্যাত সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারী সৌরভ ও তার সহযোগীদের সাথে চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন এবং সেই অর্থের ভাগ নিয়েই এই কোন্দলের সূত্রপাত।
বাড়ির মালিক আশরাফুন্নাহার জানান, এক মাস আগে তন্বী নামের ওই তরুণী স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। তিনি নিজেকে এনজিওকর্মী পরিচয় দিলেও বাসায় অপরিচিত পুরুষদের আনাগোনা ছিল। তার অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে চলতি মাসেই তাদের বাসা ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।
কেএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ বিভাগ) তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আহত মোতালেব শিকদার বর্তমানে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তিনি সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। সিটি স্ক্যান রিপোর্টে কোনো জটিলতা পাওয়া যায়নি। পুরো ঘটনার নেপথ্যে থাকা আসামিদের ধরতে পুলিশের কাজ চলমান রয়েছে।