জাতীয়

বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারোর নেতৃত্বে শত বছরেও আওয়ামী লীগ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা, তাঁর অনুগত কিংবা বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারোর নেতৃত্বে শত বছরেও আওয়ামী লীগ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।

আজ ১৮ ই ফেব্রুয়ারী সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন– অনেকের ধারণা, শেখ পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এলে ভালো হবে। না, তেমন মনে হয় না। সেটি হবে না। বাংলাদেশে আর কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওই পরিবারের নেতৃত্ব কাজে আসবে না।

তবে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল অর্থাৎ সব পর্যায়ের কর্মীর পছন্দের নেতৃত্ব যদি আপনা-আপনি উঠে আসে, সেই নেতৃত্বে জনতার লীগ নতুন করে মাথা উঁচু করে অবশ্যই দাঁড়াতে পারে।

সেই নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু হুজুর মওলানা ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জনতার দল হিসেবে আওয়ামী লীগ অবশ্যই এগিয়ে যাবে। 

কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কিছু কিছু লোক ভাবছেন– দুই-এক মাস পরেই দেশে চলে আসবেন শেখ হাসিনা। এটি হতেও পারে। দুনিয়াতে এ রকম অনেক কিছুই হয়।

আমার কাছে এটি ষোল আনাই ভোগাস মনে হয়। অন্য কোনো দেশ হাসিনাকে আমার দেশের সরকারপ্রধান বানিয়ে দিতে পারে, এটি এখনও আমি বিশ্বাস করি না।’

‘শেখ হাসিনা কি আর কখনও রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবেন’– এই প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, অন্যায় স্বীকার এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে সংশোধিত হলে আবার রাজনীতিতে হয়তো ফিরে আসতেও পারবেন শেখ হাসিনা।

সেজন্যে তাঁকে এক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের অনেকের মতো জেল-জুলুমও সহ্য করতে হতে পারে। সে সময় দয়াময় আল্লাহ তাঁকে দেবেন কিনা জানি না। 

শেখ হাসিনা তাঁর শাসনের বছর তিনেক পর থেকেই দেশ, জনগণ ও বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির ক্ষতি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি। এ কারণে তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘আমার বোনের (শেখ হাসিনা) ভুলের জন্যই আজ আমরা এতটা নিগৃহীত, অপমানিত ও লাঞ্ছিত।

দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের শাসন ক্ষমতায় থাকাকালে তাঁর উচিত ছিল, বঙ্গবন্ধুকে আরও প্রিয় করে তোলা, মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। তিনি সেটি করেননি। তিনি মানুষকে অপমান করেছেন।

তোফায়েল আহমেদ (আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য), আবদুর রাজ্জাক (আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক) এবং ড. কামাল হোসেনকে (প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী) পদে পদে ছোট করেছেন।

আমি (কাদের সিদ্দিকী) কতটা সম্মান পেয়েছি, সেটি না হয় ছেড়েই দিলাম। আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী, যাকে দেখে রাজনীতিতে এসেছি। যার জন্য বঙ্গবন্ধুকে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর জন্য দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। তাকে কি অপমানই না করেছেন।’ 

‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে বলা হলে সেটি গ্রহণ করবেন কিনা’ এই প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমি আগ বাড়িয়ে জীবনে কোনো দিন কোনো কথা বলিনি।

আমি কারও কাছ থেকে কোনো দয়া নিতে চাই না। তবে আমি মানুষের কাছ থেকে কখনোই মুখ ফেরাইনি, কখনও ফেরাবও না। মানুষের পক্ষেই থাকব আমি।’ 

বর্তমান সরকার দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেছেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক।

তিনি যে রাজনীতিতে এতটা কাঁচা, তা জানতাম না।’ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আরও বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা যদি ঠিক পথে না থাকে তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ খারাপ হবে। তাদের ভুল পথে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।

কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অপরাধ স্বীকার না করলে জামায়াতে ইসলামীকে মেনে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা না করে কোনো দিনই শাসন ক্ষমতায় যেতে পারবে না জামায়াতে ইসলামী।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker