জাতীয়

বাস: গণপরিবহনটিই এখন গণঅসন্তোষের কারণ?

ব্যস্ত নগরী ঢাকা। এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পৌঁছাতে যাত্রীর যাতায়াতের অন্যতম ভরসা এই বাস। কিন্তু এই গণপরিবহনই এখন গণভোগান্তি আর গণঅসন্তোষের কারণ। বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে রাজধানীর মালিবাগ থেকে এমন একটি বাসের যাত্রী হলো যমুনার টিম।

একজন যাত্রী বলেন, তারা ভাড়া নিয়ে অরাজকতা করে। ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা নেয়। আরেকজন যাত্রী বলেন, তারা খারাপ ব্যবহার করে। অপমান হতে হয় সবার সামনে। যার দরুণ অনেকেই ৫ টাকা বেশি ভাড়ার জন্য প্রতিবাদ করে না। আরেকজনের বক্তব্য, তারা ভাড়া বেশি নেয়। বলতে গেলে প্রতিটা মানুষ জিম্মি বাসওয়ালাদের কাছে।

যাত্রাপথে হেলপার-কনডাক্টরের সাথে লেগেই থাকে কথা কাটাকাটি। কখনও তা গড়ায় হাতাহাতিতে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদেরও আছে ভিন্ন যুক্তি।

এক বাসের ড্রাইভারের কাছে ভাড়ার চার্ট কোথায় জানতে চাইলে বলেন, এটা ছিঁড়ে ফেলে জনগণই। প্রতি গ্লাসে লাগিয়েছি আমরা। কিন্তু পাবলিক তা ছিঁড়ে ফেলে। বাসের একজন হেল্পার বলেন, এতো ভিড় দেখেও পাবলিক বাসে ওঠে কেন? গাড়ি ভরা থাকলে তারা ঠেলে ওঠে কেন?

যাত্রীদের বেশি ক্ষোভ রয়েছে ভাড়ার নৈরাজ্য, ওয়েবিলের নামে বেশি টাকা আদায় ও চেকার পদ্ধতি বন্ধ না হওয়া নিয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন বন্ধ হয়নি ওয়েবিল?

বাসের এক কন্ডাক্টর বলেন, সরকার থেকে নিষেধ করেছে, ঠিক আছে। কিন্তু কোম্পানি চলছে মালিকের জন্য। আরেকজন বলেন, সরকার তো অনেক নির্দেশনা দেয়। সেটা কি সবাই পালন করে? একজন ওয়েবিল ম্যানেজারের বক্তব্য, ওয়েবিলে ড্রাইভারকে বেতন দেয় মালিক। সড়কে বিশৃঙ্খলা হয় না। আর ওয়েবিল না থাকলে টার্গেট হয়। তখন সড়কে বিশৃঙ্খলা হয়। ড্রাইভাররা পারাপারি (প্রতিযোগিতা) করে।

উল্লেখ্য, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ২০২২ সালে ওয়েবিল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলো। কিন্তু দুবছর পার হলেও বন্ধ হয়নি ওয়েবিল প্রথা।

Image

সরকারের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েই এখনও গণপরিবহনগুলোতে চলছে চেকার পদ্ধতি। স্টপেজে বাস প্রতি ১০ টাকা করে পায় চেকাররা।

একজন বাসচেকার বলেন, গাড়িতে কতজন যাত্রী থাকে, চেকার পদ্ধতি থাকলে সেটা বোঝা যায়। আরেকজন চেকার জানান, এই চেক থেকে কেউ ওই চেকে নামলে বাসের স্টাফ তার কাছ থেকে ১০ টাকার বেশি ভাড়া নিতে পারবে না। এই পদ্ধতি সবার জন্য ভালো। বাসযাত্রী, মালিক ও শ্রমিক, সবার জন্যই এটা কল্যাণজনক।

এদিকে সরকার ই-টিকেটিং চালু করলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ভাড়া নৈরাজ্য। গণপরিবহনগুলো বলছে, ভিড়ের মাঝে পজ মেশিন দিয়ে ভাড়া কাটা সম্ভব নয়। তবে কেউ চাইলে দেয়া হয়।

পরিবহন বিশেষজ্ঞরা জানান, বাস মালিকদের মুনাফামুখী হওয়ার কারণেই ই-টিকেটিং সিস্টেম ফেল করেছে। কিন্তু সেবা নিশ্চিত করতে হলে ডিজিটালজেশনের কোনো বিকল্প নেই।

Author


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker