জাতীয়স্বাস্থ্য

দেশে একদিনে আরো ১৩৪ মৃত্যু

দেশে একদিনে করোনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর দুইদিন পরেই আরো ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দেশে একদিনে দ্বিতীয় সবোর্চ্চ মৃত্যু। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১ জুলাই ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ছিল ১৪৩ জনের।আর আজ শনিবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ছাড়াও টানা সাত দিন শতাধিক মৃত্যুর রেকর্ডও হলো। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ হাজার ৯১২জনে।

২৪ ঘণ্টায় ২২ হাজার ৬৮৭ নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ২১৪ জন। গতকালও শনাক্ত হয়েছে সবোর্চ্চ ৮ হাজার ৪৮৩ জন। টানা তিন দিন ২৪ ঘণ্টায় আট হাজারের বেশি শনাক্তের পর আজ কমেছে। এতে মোট শনাক্তরে সংখ্যা দাঁড়াল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৬ জন। বৃহস্পতিবার সারা দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২২ হাজারের বেশি, তাতে শনাক্তের হার বেড়ে ২৭ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যু ও দুইবার শনাক্তের রেকর্ড ভাঙা দেখল দেশ। কঠোর লকডাউনে যাওয়া কত জরুরি ছিলে, তা শনাক্ত ও মৃত্যু এই পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে।

গত এপ্রিলের রেকর্ড ভেঙে ২৭ জুন এক দিনে ১১৯ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, তার চার দিনের মাথায় ১ জুলাই ১৪৩ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়। দুই দিন পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৪ জনের মৃত্যু দেখল বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭৭৭ জন। যা নিয়ে মোট সুস্থ ৮ লাখ ২৯ হাজার ১৯৯ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সেখানে কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত ২০ শতাংশের বেশি হচ্ছে।

বর্তমানে দেশের অধিকাংশ জেলা করোনার ভয়াবহতার ঝুঁকিতে রয়েছে। ১৪ থেকে ২০ জুন নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ; প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর আড়াই মাস পর গত বছরের ১০ জুন মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়ায়। এরপর ৫ জুলাই ২ হাজার, ২৮ জুলাই ৩ হাজার, ২৫ অগাস্ট ৪ হাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ৫ হাজার ছাড়ায় মৃতের সংখ্যা।

এরপর কমে আসে দৈনিক মৃত্যু। ৪ নভেম্বর ৬ হাজার, ১২ ডিসেম্বর ৭ হাজারের ঘর ছাড়ায় মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি ৮ হাজার এবং ৩১ মার্চ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়ায়।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর ১৫ দিনেই এক হাজার কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটলে গত ১৫ এপ্রিল মৃতের মোট সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের এক হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটাতে মাত্র দশ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস; মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায় ২৫ এপ্রিল।

তার ১৬ দিন পর ১১ মে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার এক মাস পর ১১ জুন তা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছিল। এর ১৫ দিন পর ২৬ জুন এই সংখ্যা ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

দিনে মৃত্যুর রেকর্ডও হয়েছে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে। ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর ২৭ জুন মৃত্যু হয় ১১৯ জনের। ২৯ জুন আবার ১১২ জনের মৃত্যু হয়। ৩০ জুন মারা যান ১১৫ জন। ১ জুলাই মৃত্যু হয় রেকর্ড ১৪৩ জনের।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker