মঙ্গলবার নাগাদ বন্যার মুখে পড়বে উত্তরাঞ্চল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার অববাহিকার সব নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি। টানা বৃষ্টি-উজানের ঢলে দেশের বন্যাপ্রবণ ১০১টি পয়েন্টের মধ্যে পানি বেড়েছে ৬৩ পয়েন্টে। পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, এ বছরের প্রথম বন্যার মুখে পড়বে যমুনা-পদ্মার অববাহিকার ১২ জেলা। যা স্থায়ী হবে অন্তত ৩ সপ্তাহ।
এবার আষাঢ়ের শুরু থেকেই হচ্ছে ভারী বর্ষণ। এতে পানি বাড়ছে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ নদ-নদীতে। টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। এরইমধ্যে পানি ঢুকেছে ৫০টির মতো গ্রামে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, মঙ্গলবার নাগাদ ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যাবে। আর তা বাড়তে থাকবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ায় দেখা দেবে বন্যা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশের নানা জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এর ফলে এই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকা ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টিপাতে নদনদীর অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা ও পদ্মার পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়বে। অন্যদিকে সুরমা ব্যতিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়বে।
এরইমধ্যে আসাম-মেঘালয়ের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের খোয়াই, সুনামগঞ্জে জাদুকাটা, ফেনীর মুহুরি ও নেত্রকোণার কংস নদীর বইছে বিপৎসীমার। এতে পানির নিচে চলে গেছে নিচু এলাকা। তবে পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, এখানকার বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
যমুনা অববাহিকার পাশাপাশি পদ্মার শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও রাজবাড়ীতেও পানি বাড়ছে দ্রুত। পদ্মা পাড়েও বন্যার সতর্ক বার্তা দিচ্ছে পূর্বাভাস কেন্দ্র।
বর্ষা মৌসুমে সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতি সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও তথ্য সংগ্রহে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর ০১৩১৮২৩৪৫৬০। কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বন্যা পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেলের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবেন।
এদিকে সারা দেশে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন গ্রামবাসী।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts sent to your email.