জাতীয়

চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না, সংস্কারের উদ্যোগ: জানালেন প্রেসসচিব

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না, বরং এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশ্বের বড় কোম্পানিগুলো এখানে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম কাউকে দেওয়া হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমরা চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না। বন্দরকে সংস্কার করতে চাচ্ছি।” আজ রবিবার (২৫ মে, ২০২৫) দুপুরে রাজধানীর ক্যাপিটাল মার্কেট সাংবাদিক ফোরামের (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তার এই বক্তব্য চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলমান বিভিন্ন জল্পনা ও উদ্বেগের অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে।


প্রেসসচিব শফিকুল আলম তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দরকে আধুনিকায়ন ও এর সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার চায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানিগুলো চট্টগ্রাম বন্দরকে যেন ম্যানেজ করতে পারে। এটি কেবল ব্যবস্থাপনার বিষয় নয়, বরং বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করাও সরকারের লক্ষ্য। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, তারা টার্মিনালে যেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন এবং এর ব্যবস্থাপনা হাতে নেন। এর মাধ্যমে বন্দর আন্তর্জাতিক মানের পরিষেবা দিতে সক্ষম হবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগটি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।


চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের আশ্বাস:

  • লক্ষ্য: বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানিগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় অংশ নিক।
  • আশ্বাস: ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে।
  • উদ্দেশ্য: টার্মিনালগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন।

শফিকুল আলম জানান, ইতোমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে। এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়ন, নতুন টার্মিনাল নির্মাণ এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সরকার বিশ্বাস করে, আন্তর্জাতিক মানের বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা দেশের সর্ববৃহৎ এই বন্দরের কর্মদক্ষতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে, যা আঞ্চলিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং এটি আরও বেশি আন্তর্জাতিক জাহাজ ও পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম রাজধানীর ক্যাপিটাল মার্কেট সাংবাদিক ফোরামের (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরেন। সিএমজেএফ টক একটি নিয়মিত আয়োজন, যেখানে অর্থনৈতিক ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাদের মতামত ও সরকারের নীতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। আজ রবিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানটি দেশের অর্থনৈতিক খাতের সাংবাদিক ও বিশ্লেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। চট্টগ্রাম বন্দরের মতো একটি সংবেদনশীল বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করাটা বর্তমান পরিস্থিতিতে খুবই প্রাসঙ্গিক।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker