তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র তুরস্কেই ৪৪ হাজার ২১৮ জন এবং সিরিয়ায় আরও ৫ হাজার ৮০০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে, গত ১০০ বছরের মধ্যে ১০টি প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের একটি তুরস্ক-সিরিয়ার এই ভূমিকম্প।
সংশ্লিষ্টদের শঙ্কা, এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন অনেকে। তবে সময় যতো এগোচ্ছে জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার আশা অনেকাংশে ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, এরইমধ্যে গৃহহীন হয়েছেন ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ এক বিলিয়ন ডলারের অর্থ সহায়তার আবেদন করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে অনেকেই মারাত্মক জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন। তারা খাবার, পানি এবং টয়লেট ছাড়াই ঠান্ডায় হিমায়িত অবস্থায় রয়েছেন, এতে রোগব্যাধি ছড়িয়ে আরও বিপর্যয়ের আশংকা বাড়ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য তহবিলের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এখন অনেক কিছুর প্রয়োজন, মানুষ ভুগছে এবং সময় নষ্ট করার অবকাশ নেই। সহযোগিতার আহবানের অর্থে ৫২ লাখ মানুষকে তিন মাসের জন্য মানবিক ত্রাণ সরবরাহ দেয়া হবে।
তিনি যোগ করেন, এই অর্থ খাদ্য নিরাপত্তা, সুরক্ষা, শিক্ষা, পানি এবং আশ্রয়ের ক্ষেত্রে ‘সহায়তা সংস্থাগুলোকে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেবে’।
বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকম্প অঞ্চলগুলোর মধ্যে তুরস্কের একটি জনবহুল এলাকায় এই ভূমিকম্প এমন সময়ে আঘাত করলো, যখন অনেকেই বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। এসব বাড়িঘর শক্তিশালী ভূকম্পন প্রতিরোধ করার মতো করে তৈরি করা হয়নি। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
ভূমিকম্পের পরপরই অনেক অঞ্চলে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে লাখ লাখ ভবন।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের একাধিক দেশ সাধ্যমতো ত্রাণ ও সাহায্য নিয়ে ছুটছে তুরস্ক-সিরিয়ায়।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প। এর কয়েক ঘণ্টা পরে আবার ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয় ওই অঞ্চলে। এতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় তুরস্কের দক্ষিণ এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।