বিনোদন

মেগাস্টার শাকিবের ‘তুফান’ ঝড়ে বাংলাদেশ

পূর্বের কথা মোতাবেক এখন থেকে পুরো দেশকে তুফানের হাতে তুলিয়া দেবো! সে যা চাইবে, পাইবে! যা করিতে চাইবে, করিবে। তাহাকে কোন কিছুতেই বাধা দেয়ার এখতিয়ার কেউ রাখিতে পারিবে না!

কে বলেছে সাধু ভাষা পুরাতন, বোরিং! মেগাস্টারের কণ্ঠে সাধু ভাষা যেন আগ্রাসী ও ভয়াবহ! অবশেষে, চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা তুফানের টিজার মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে আলফা আই, চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ থেকে প্রকাশ করা হয় টিজার।

শুরুতেই বলে নেয়া ভালো যে অনেকেই এই টিজার দেখে বলেছেন ‘কেজিএফ’ কিংবা ‘অ্যানিম্যাল’ সিনেমার নকল! হতেই পারে নকল! প্রত্যেকটি দর্শকের নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। তবে এই কথা সত্য যে এই পৃথিবীতে সব কিছুই কোন না কোন পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

বিখ্যাত মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েন বলেছেন, নতুন আইডিয়া বলে কিছু নেই। এটা অসম্ভব! আমরা কেবল পুরানো ধারণা গ্রহণ করি এবং সেগুলিকে এক ধরণের মানসিক আয়নায় রাখি। পুরানো ধারণাগুলোকেই আমরা শুধু নতুনত্ব ও কৌতূহলের সমন্বয় তৈরি করি।

মার্ক টোয়েনের কথাগুলো আমলে নিলে ধরেই নিতে হবে ‘কেজিএফ’ কিংবা ‘অ্যানিম্যাল’ কোন কিছুই অরিজিনাল নয়। ঠিক তেমনি তুফান সিনেমাও।

বহুল প্রতীক্ষিত ১ মিনিট ২১ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওতে রাশিয়ান কালাশনিকভ বা একে-৪৭ মেশিন হাতে এন্ট্রি নেন শাকিব। এরপর অন্য এক দৃশ্যে শাকিব পানশালায় বসে আছেন ড্রিংকস নিয়ে। হঠাৎ করে সিগারেট জ্বালান তিনি। অবশ্যই ক্লাসিক ‘জিপ্পো লাইটার’ দিয়ে। আবার অন্য এক দৃশ্যে পিয়ানো বাজাচ্ছেন তিনি। এরপরই অস্ত্র হাতে একের পর এক বারুদে তছনছ করে ফেলতে দেখা যায় শাকিব খানকে।

১৯৯১ সালের ‘টার্মিনেটর-২’ সিনেমা অনেকেরই মনে আছে নিশ্চয়! ওই সিনেমায় আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার যে মিনিগান ব্যবহার করেছেন, ঠিক সেই মডেলের একটি ব্যবহার হয়েছে কেজিএফ, অ্যানিম্যাল ও তামিল সিনেমা ভিকরামে। তবে হুবুহু নয়। একটু মডিফাই করে। শাকিবও সেই একই মিনিগান মডেল নিয়ে গুলি করে উড়িয়ে দেন টিজারের একটি দৃশ্যে।

এখানেই শেষ নয়। ভিডিওতে দেখা মেলে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। তার সেই বিখ্যাত সংলাপের অট্টহাসি দিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘তুফান, খুব ভয় পাইছি রে হেহেহেহে….’। 

এরপরই আরও একবার স্ক্রিনে বিধ্বংসী রূপে হাজির হন শাকিব। এবার বাথট্যাবে বসে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। পাশে জ্বলছে আগুন। হাতে তার সিগারেট। আর এভাবেই শেষ হয় তুফানের টিজার।

এবার আসা যাক, সিনেমা সেট ডিজাইন, কস্টিউম এবং লুকে। মানতেই হবে, সিনেমাটি ভারতের দক্ষিণী সিনেমাগুলোর সাথে কিছুটা মিল আছে। সমস্যা নেই! কারণ, বাংলাদেশে এরকম ভিন্নধর্মী সেট ডিজাইন সিনেমায় খুব কমই দেখা যায়। বোঝা যাচ্ছে, দর্শকদের হলে ফেরাতে টাকা-পয়সা নিয়ে কার্পণ্য করেননি কেউই। তাছাড়া, ক্যামেরার কাজ, লাইট সবকিছুই দুর্দান্ত।

এবার আসা যাক মেগাস্টার শাকিবের লুকে। তিনি নিজের চুল ও দাড়ি যেভাবে রেখেছেন, দেখে মনে হচ্ছে সিনেমার গল্প ৯০’র দশকের কোন গডফাদারের। আর শাকিবকে লাগছেও গডফাদার। অন্যদিকে, অনামিকায় পরেছেন গডফাদার টাইপ আংটি। এছাড়াও সিনেমাতে ৯০’স-এর বিখ্যাত কনভার্টিবল গাড়িতো আছেই।

এছাড়াও সাধারণ মানুষের মনে ধরবে এমন ডায়লগ ব্যবহার করা হয়েছে সিনেমার টিজারে। সাধু ভাষার ব্যবহার যে অ্যাকশান সিনেমায় করা যেতে পারে, তা এই টিজার না দেখলে বুঝার অবকাশ নেই। মৃতপ্রায় সাধু ভাষাকে ফের পর্দায় ব্যবহার করা হয়েছে দারুণভাবে।

এতোকিছুর পরও মেগাস্টার শাকিবের সিনেমা যদি যোগ্য প্রশংসা না পান, তাহলে শাকিবতো টিজারে বলেছেনই, ‘ আর এর ব্যত্যয় ঘটিলে………………..মিনিগান দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করিয়া দেওয়া হইবে!

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker