বিনোদন

মৃণাল রূপে চঞ্চল: আরও কিছু ঝলক ও শুটিংয়ের হালচাল

নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির চোখ ও চিন্তা যে ভুল নয়, তার প্রমাণ মাস খানেক আগেই পাওয়া গেছে। কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের রূপে যখন চঞ্চল চৌধুরীর লুক প্রকাশ করা হয়, তখন চুপ থাকতে পারেননি কেউই। সবার মুখ থেকেই বেরিয়েছে প্রশংসা বাক্য।

ছবির নাম ‘পদাতিক’। মৃণাল সেনের জীবনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ছবিটি বানাচ্ছেন টলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। গত ১৩ জানুয়ারি ছবিতে চঞ্চলকে কী রূপে দেখা যাবে, তার একছটা প্রকাশ করা হয়।

এক মাস পর আবারও সামনে এলো কিছু স্থিরচিত্র। এবারও বাউন্ডারি হাঁকালেন চঞ্চল। তাকে দেখে চেনার উপায় নেই, চঞ্চল নাকি মৃণাল! এমন দ্বিধা-দোটানায় পড়ছেন ভক্ত, সহকর্মীরা। আর সবার মনের ভেতর কোথাও যেন বয়ে যাচ্ছে গৌরবময় অনভূতির বাতাস।

মৃণাল রূপে চঞ্চলের চারটি ছবি পোস্ট করেছেন তার বন্ধু, অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। একটিতে বৃদ্ধ মৃণালের সাজে সেলফি তুলছেন, দুটিতে সিগারেট ফুঁকছেন, আরেকটিতে ভাবুক চাহনিতে দাঁড়িয়ে আছেন রাস্তায়।

ছবিগুলোর সঙ্গে খুশির মুগ্ধতা ভরা বার্তা, ‘তুই আর কী কী অনবদ্য অভিনয়ে, গেটআপে চমকে দিবি, সেই ভয়ে ভীত থাকি বন্ধু! তুই আমাদের অভিনয় জগতের এক অন্য অহংকার, অন্য ভালোবাসা। অপেক্ষায় আলোড়িত হচ্ছি রোজ, কবে দেখবো তোর এবারের চমক! তোর অবিরাম সাফল্য কামনা করি।’

শুধু শাহনাজ খুশি নয়, দেশের আরও অনেক শিল্পী, সাধারণ দর্শক চঞ্চলের ছবিগুলো পোস্ট করছেন আর প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন। চঞ্চল নাকি মৃণাল; এই দ্বিধায় যখন তারা ডুবে আছেন, তখন শুটিংয়ে ব্যস্ত চঞ্চল।

May be an image of 4 people, people sitting, people standing and indoor

জানা গেলো, এই মুহূর্তে কলকাতায় অবস্থান করছেন অভিনেতা। কলকাতার বেচু চ্যাটার্জি স্ট্রিটে চলছে ‘পদাতিক’র শুটিং। তার হালচাল নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমে।

তাতে বলা হয়েছে, একেকটি দৃশ্যের জন্য সাত-আটটি টেক নিচ্ছেন সৃজিত। আর বিন্দুমাত্র ক্লান্তি বা বিরক্তি না দেখিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যেই শট দিয়ে যাচ্ছেন চঞ্চল। শুটিং দেখতে ভিড় জমানো লোকজনের অনেকেই তাকে চিনে নিচ্ছে, যারা চিনছেন না, তারাও তার অভিনয়শক্তি দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে।

এ শুটিংয়ে রয়েছেন টলিউড অভিনেত্রী মনামী ঘোষও। তিনি অভিনয় করছেন মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনের চরিত্রে।

‘পদাতিক’ নিয়ে শুটিংয়ের ফাঁকে সৃজিত মুখার্জি বলেন, ‘এই ছবিটা আসলে একদমই ভালবাসার জায়গা থেকে বানানো। কোনও রকম স্ট্র্যাটেজি বা টাকা কামানোর লক্ষ্য থেকে নয়। মৃণাল সেন আসলে কলকাতা শহরটাকে ভীষণ ভালবাসতেন। এলডোরাডো বলতেন। সেই এলডোরাডো আজ মৃণাল সেনকে ভুলে গেছে। কোনও রাস্তার নাম, পার্কের নাম, মেট্রো স্টেশনের নাম, কোথাও তিনি নেই। তাই কলকাতাকে মনে করিয়ে দেওয়া এই ট্রিবিউটের মাধ্যমে।’

অন্যদিকে নির্মাতা সৃজিত প্রসঙ্গে চঞ্চলের মন্তব্য, ‘তার অনেক ছবি আগেই দেখেছিলাম। তাই জানতাম কী ধরনের সিনেমা তিনি বানান। এখন কাজ করতে গিয়ে বুঝলাম, পরিচালক হিসাবে তার ভাবনাটা কতটা পরিষ্কার।’

চরিত্র প্রসঙ্গে চঞ্চলের ভাবনা, ‘মৃণাল সেনের চরিত্রটি যে কোনও শিল্পীর জন্য অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। যে কোনও বায়োপিকেই দর্শক হুবহু মেলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আরও একজন মানুষের সঙ্গে হুবহু মিলে যাওয়া তো সম্ভব নয়। প্রথম দিকে একটু ভয় লাগছিল। কিন্তু স়ৃজিত খুব সাহায্য করেছেন। তখন আগ্রহটা পেয়েছি।’

বলা প্রয়োজন, ‘পদাতিক’ সিনেমাটি নিয়ে শুভকামনা জানিয়েছেন বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চনও। এই ছবি ঘিরে সিনে জগতের মানুষের এত আগ্রহের কারণ, মৃনাল সেন উপমহাদেশের সেরা নির্মাতাদের একজন। তাই কেমন রূপে তাকে পর্দায় তুলে ধরা হয়, সেটা দেখার কৌতুহল সবার মধ্যেই বিরাজমান।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker