বিনোদন

‘যদি গডফাদার থাকতো, তাহলে প্ল্যান করতে পারতাম’

মহাকালের চিরন্তন নিয়মে সময় বয়ে যায়, দিন-সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে বছর যায়, ক্যালেন্ডার পরিবর্তন হয়ে আসে নতুন বছর। এর মাঝেই মানুষের জীবনে হয় উত্থান-পতন, আসে সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা। মহামারি করোনাভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে ২০২২ সালে মানুষ পুরোদমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলো। এই বছরটাও শেষ হয়ে গেলো। কেমন গেছে বছরটি? আর নতুন বছর নিয়েও বা ভাবনা-প্রত্যাশা কী? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যোগাযোগ করা হয় দেশের শোবিজ তারকাদের সঙ্গে।

২০২১ সালে দারুণভাবে আত্মপ্রকাশ করেছেন ঐশী। কিন্তু ২২-এ এসে নানা কারণে তাকে পর্দায় আর পাওয়া যায়নি। একাধিক সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও তারিখ পিছিয়েছে। আবার নতুন কোনও সিনেমায়ও যুক্ত হননি এই সুদর্শনা তরুণী। তাই একপ্রকার কাজশূন্য কেটেছে তার বছর।

এটাকেই সদ্য গত হওয়া বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা মনে করছেন তিনি। ঐশী বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলতে, এ বছর আমি কোনও সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হইনি। আমার কোনও সিনেমা রিলিজও হয়নি! (হাসি) আসলে ব্যক্তিগত জীবনে নানা ব্যস্ততা আর ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছি, তাই কখনও ভাবার সুযোগ হয়নি যে, এ বছর সিনেমা মুক্তি পেলো কিনা, নতুন কাজ করলাম কিনা। এরপরও বছরটিকে ভালোই মনে করছি। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ হয়ত এমনটাই রেখেছিলেন আমার জন্য।’

ক্যারিয়ারে কোনও প্রাপ্তি না এলেও বাইশে তার ঝুলিতে রয়েছে বড় একটি অর্জন। সেটা নিয়ে ঐশীর ভাষ্য, ‘আমার মায়ের টিউমার হয়েছিলো। তো আমি সম্পূর্ণ নিজের খরচে এবং দায়িত্বে তার অপারেশন করিয়েছি। একজন সন্তান বা মানুষ হিসেবেও এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। হয়ত মানুষ আরও অনেক কিছুই করে, তবে এই বয়সে আমার জন্য এটাই অনেক বড় প্রাপ্তি।’

নতুন বছরের পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে ঐশীর জবাব, ‘ক্যারিয়ার নিয়ে কোনও প্ল্যান করি না। সত্যি বলতে, আমার যদি একজন গডফাদার থাকতো, তাহলে প্ল্যান করতে পারতাম। যেহেতু আমার কোনও গডফাদার নেই, আমার কাছে কাজের অফার যবে আসবে, তবে আমি চিত্রনাট্য পড়বো, কাজের সঙ্গে যুক্ত হবো। এজন্য নিজে প্ল্যান না করে ক্যারিয়ারের বিষয়টা আল্লাহর ওপরই ছেড়ে দিয়েছি। বড়জোর আমি নিজেকে ইমপ্রুভ করতে পারি। এটাই আমার হাতে আছে।’

গেলো বছরে নিজের আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মানসিকতায় কিছুটা ভাটা পড়েছে বলেও জানালেন ঐশী। সেটাকে শুধরে পুরোদমে ফেরার ইচ্ছে তার। বললেন, “২০১৮ সালে যখন আমি ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ দিয়ে জার্নি শুরু করেছিলাম, তখন আমি খুব আত্মবিশ্বাসী মানুষ ছিলাম। এখন যে একদমই নেই, তা নয়। তবে তখন যেমন ছিলাম, আমার মানসিকতায় যে ফ্রেশনেস ছিলো, যেরকম ইতিবাচক ছিলাম, ২০২২-এ কোনও কারণে মনে হলো, পজিটিভিটি আর কনফিডেন্স কিছুটা হারিয়ে ফেলেছি। সেটা হতে পারে পেশাগত জীবনে নানা বিষণ্ণ ঘটনার কারণে। ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে দেওয়ার মতো সময় কম পেয়েছি। এখন আমার মনে হচ্ছে, দিনশেষে কিছুই আমার হাতে নেই, একমাত্র আমি ছাড়া। তাই নিজেকে নিয়েই কাজ করতে হবে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নতুন বছরে নিজেকে আরও সময় দেবো। শারীরিক, মানসিক এবং ব্যক্তিত্ব সবদিকেই নজর দেবো। সেই প্রথম দিকের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাবো।”

ক্যারিয়ার না হোক, ব্যক্তিগত জীবনে কোনও প্ল্যান নেই? ঐশীর উত্তর, ‘আছে; কিন্তু ব্যক্তিগত বলতে সবাই শুধু প্রেম বোঝে। এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বড় প্ল্যান হলো, বাবা-মাকে খুশি রাখা। আমি খুব চেষ্টা করবো, সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর। আমার বাবা-মায়ের কোনও ছেলে নেই। এ দেশের প্রেক্ষাপটে সবাই ভাবে, ছেলেরাই দিনশেষে বাবা-মায়ের দায়িত্ব নেয়, মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। কিন্তু তাদের প্রয়োজনের সময়ে আমি যেন সেই ভরসার মানুষটা হতে পারি, তাদের পাশে থেকে পর্যাপ্ত সেবা করতে পারি, এটাই আমার লক্ষ্য।’

কাজ কম হলেও নিজেকে স্রোতে ভাসাতে চান না ঐশী। জানালেন, সিনেমাতেই থাকতে চান। এর বাইরে বড়জোর ওয়েবে পছন্দসই কাজ পেলে করবেন। তবে ছোট পর্দায় কাজের কোনও ভাবনা তার নেই।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker