বিনোদন

পরিমণিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

তৃতীয় দফার রিমান্ড শেষে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার (২১ আগস্ট) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে অপরাধ গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি) তাকে আদালতে হাজির করে। পরে শুনানি শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।

শনিবার পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হলেও তার আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিনের আবেদন করেননি। তবে তিনি পরীমনির সঙ্গে কথা বলার জন্য আবেদন করেন। সে আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারক কথা বলার অনুমতি দেননি।


বিচারক এজলাসকক্ষ ত্যাগ করার পর পরীমনির কাছে যান তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত। তখন পরীমনি তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা আমার জামিন চান না কেন? আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি। আপনারা জামিন চান, আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? আমি তো পাগল হয়ে যাব! আপনারা  বুঝতেছেন আমার কী কষ্ট হচ্ছে?’
 
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করলে আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আরও একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। ওই দিন দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম এ আদেশ দিয়েছিলেন। তৃতীয়বারের মতো পরীমনিকে রিমান্ড শেষে আজ শনিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে হাজির করে।


বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পরীমনির রিমান্ড ও  জামিন শুনানি শুরু হয়েছিল। শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন বিচারক।

এর আগে গত বুধবার (১৮ আগস্ট) এ অভিনেত্রীর আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। বুধবার (১৮ আগস্ট) আদালতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা।
 
তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) শুনানির দিন ধার্য করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত। একই দিন পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানিও করার কথা ছিল।

পূর্বের জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনা ও নেপথ্যে থাকা মূল হোতাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন পরীমনি। আসামিকে রিমান্ডে পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের গ্রেপ্তার এবং এর অবৈধ উৎসসহ অপরাধলব্ধ আয়ের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে উল্লেখ করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা। এর আগে গত ১৬ আগস্ট নায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী।

এরআগে পরীমনি নির্দোষ এবং ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করে তার আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান বলেন, আসামি একজন নারী। ফলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৪৭(১) (গ) মোতাবেক জামিন পেতে পারেন। জামিন পেলে আসামি জামিনের শর্ত ভঙ্গ করবেন না এবং আদালতের নির্দেশমতে জামিনদার প্রদান করবেন।

আসামি দু’দফায় ছয় দিন রিমান্ডে থাকাসহ প্রায় ২৬ ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে থাকলেও মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

জামিন আবেদনে আরও বলা হয়, আসামি ‘ভারটিগো’ এবং ‘প্যানিক অ্যাটাক’ এর রোগী, দীর্ঘসময় পুলিশ কাস্টডিতে থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপর্যস্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসার স্বার্থে দরখাস্তকারী আসামিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক। আসামির দখল ও নিয়ন্ত্রণ থেকে মদ ও মাদক উদ্ধার হয়নি। আসামি নির্দোষ, ষড়যন্ত্রের শিকার বিধায় আসামিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া আবশ্যক।
 
পরীর আইনজীবী আদালতকে বলেন, এজাহার মোতাবেক ঘটনার অভিযান পরিচালনাকারী র‌্যাব টিম ‘দ্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ এর ৬ এবং ৬-এর এ ধারা লঙ্ঘন করে অভিযান পরিচালনা করে। যার ফলে একটি ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করার কারণে আসামি জামিন পাওয়ার হকদার। আসামি পরীমনি একজন প্রথম সারির চিত্রনায়িকা। ‘ফোর্বস ম্যাগাজিন’ ডিজিটাল তারকা হিসেবে বিশ্বের ১০০ জনের মধ্যে তার নাম অন্তর্ভুক্ত। আসামি জেলহাজতে আটক থাকলে চলচ্চিত্র অঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker