বলিউডের আলোচিত আইটেম গার্ল ও অভিনেত্রী সানি লিওনি ঢাকায় এসেছিলেন শনিবার (১২ মার্চ)। তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
বাংলাদেশের গায়ক-সুরকার-সংগীত পরিচালক ও গান বাংলা চ্যানেলের কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপসের মেয়ের বিয়েতে যোগ দিতেই স্বামীসহ আসেন সানি লিওনি। তবে শুধু তিনি নন, বিয়ের এই আয়োজনে বলিউড-টালিউডের একাধিক জনপ্রিয় তারকাও ছিলেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশি তারকারাও ছিলেন।
তবে সানি লিওনির এই হঠাৎ করে বাংলাদেশে আসা নিয়ে আলোচনা চললেও অনেকেই সমালোচনা করেন। সম্প্রতি দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। পাঠকের জন্য স্ট্যাটাসটি প্রকাশ করা হলো।
‘দুনিয়া হলো ভণ্ড লোকের কারখানা। ভারতীয় এক অভিনেত্রী’র বাংলাদেশে আগমন নিয়ে যে মাতামাতি দেখছি সেটার অন্যতম কারণ তিনি একজন সাবেক পর্নস্টার। মানুষের আচরণে মনে হচ্ছে পর্নস্টার হওয়াটা খুব গর্হিত অপরাধ, এবং সামাজিকভাবে খুবই কদর্য একটা বিষয়।
এখন প্রশ্ন হলো যারা এই সামাজিক মানদণ্ড বানিয়েছেন, তারা কীভাবে জানেন যে এই অভিনেত্রী একজন সাবেক পর্নস্টার? আপনারা এতটা ব্যাপক হারে পর্ন না দেখলে তো আর সে স্টার হতো না! কয়েক বছর হলো দেশে পর্ন সাইটগুলো সরকারিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার পরও কী পর্ন দেখা বন্ধ হয়েছে? ভিপিএন দিয়ে পর্ন দেখার এই তেলেসমাতি তো এই তথাকথিত সভ্য সমাজেরই আবিষ্কার, না কী?
এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষ গোপনে গনিকালয়ে যাবে ফুর্তি করতে এবং ফিরে এসে পাক-সাফ হয়ে নারীকে বেশ্যা বলে গালি দেবে। দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে এমনও নারী আছে, যার চোখ জোড়া আদতে পুরুষতান্ত্রিক! আপনার সুবোধ এবং সুশীল স্বামীটি যখন সানিলিয়ন বলে নাক সিঁটকাবে, তখন আপনি তাকে দয়া করে জিজ্ঞেস করবেন-ওগো আমাকে কী তোমার ভালো লাগে না, তুমি গোপনে কেন সানি লিয়নিকে দেখো?
যাই হোক, পৃথিবীতে নানান ধরনের পেশা রয়েছে, মিউনিসিপ্যালিটির সুইপার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র প্রধান, যত ধরনের পেশা আবিষ্কার হয়েছে-সেই সেবাগুলো কেউ না কেউ নেয় বলেই আবিষ্কার হয়েছে। সুতরাং পৃথিবীর যেকোনো পেশা-যা মানবতা বিরোধী নয় বা মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় সেই পেশাকে সম্মান করতে শিখুন, নিজেও সম্মানিত হবেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রায় ১৯ ঘণ্টা অবস্থান শেষে রোববার (১৩ মার্চ) সকাল ৯টা ২০ মিনিটের ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন তিনি।