বিনোদন

অবশেষে মান্নার কবর সংস্কার করলেন স্ত্রী

আজ থেকে ১৪ বছর আগে বসন্তের এক সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ঢাকাই সিনেমার খ্যাতিমান অভিনেতা মান্না। মৃত্যুর পর নিজ গ্রাম টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।

দীর্ঘদিন ধরেই প্রয়াত মান্নার কবর সংস্কার নিয়ে নানান জটিলতা ছিল। সব জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে এই নায়কের কবর সংস্কার করা হয়েছে।

মান্নার স্ত্রী শেলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কবরটির সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। তার বড় কারণ হলো এটি পারিবারিক কবরস্থান। অনেকের সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল। এর আগে আমরা মান্নার কবরটি সংস্কার করেছিলাম। নিচু জায়গায় হওয়ায় কবরে মাটি ফেলতে হয়েছে। এ ছাড়া মান্নার চাচা প্রবাসী হওয়ায় তারও আসার একটা ব্যাপার ছিল। উনি আসার পর মান্নার কবরটি সংস্কার করা হয়েছে।’

দীর্ঘদিন মান্নার কবর সংস্কার না করায় অনেক সমালোচনা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শেলী বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো করে এককভাবে কবরটি সংস্কার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারিবারিক কবরস্থানের জন্য সেটি সম্ভয় হয়নি। মানুষের নেগেটিভ মন্তব্যে জর্জরিত হয়েছি। আমাদের ভেতরটা ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। মান্নার পরিবারকে মানুষ না জেনে অসম্মানিত করেছে। মান্নার যারা অনুরাগী তাদের কাছে আমার অনুরোধ, না জেনে বুঝে আপনারা ভুল তথ্য ছড়াবেন না।’

তবে যেখানে মান্নার কবরটি রয়েছে সেদিকটা উঁচু প্রাচীরে আটকানো। ফলে মান্নার বহু ভক্ত প্রিয় নায়কের কবর জিয়ারত থেকে বঞ্চিত হতে পারে, এমন শঙ্কায় মান্নার স্ত্রী বলেন, ‘মান্না শুয়ে আছে উত্তরদক্ষিণে, সেদিকের মুখটা খোলা নেই। একটি দেয়াল দিয়ে আটকানো। নায়ক মান্নার অগণিত ভক্তকূল যারা প্রতিনিয়ত আসবে, কবর জিয়ারত করবে তারা কোথায় দাঁড়িয়ে সেটা করবে? এমনকি ভেতরে যাওয়ার অনুমতি না পেলে দূরদূরান্ত থেকে আসা মান্না ভক্তরা তার সমাধিস্থলটি দেখতে পারবেন না। সেখানে তার কর্মজীবন নিয়ে কিছু জিনিস লেখা আছে, দাঁড়িয়ে পড়তে পারবে না। সমস্যাটা এখানেই! মান্নার চাচার প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ যেন প্রাচীরটা খুলে দেয় অথবা জানালার মতো একটি জায়গা করে দেয়।’

প্রসঙ্গত, মান্না অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘তওবা’। তবে তার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘পাগলি’। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ ছবিতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে কাজ করেন মান্না। ছবিটি ব্যবসা সফল হওয়াতে মান্নাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

প্রযোজক হিসেবেও মান্না বেশ সফল ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো ছবি প্রযোজনা করেছেন প্রতিটি ছবি ব্যবসা সফল হয়েছিল। ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- লুটতরাজ, লাল বাদশা, আব্বাজান, স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ, দুই বধূ এক স্বামী, মনের সাথে যুদ্ধ, মান্না ভাই ও পিতা-মাতার আমানত। মান্নার তার কাজের মাধ্যমে লাখো ভক্তের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে।

এরপর কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ ছবির মাধ্যমে তার একক নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। একে একে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’, ছবিগুলো মান্নার অবস্থান শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৯ সালে ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপারহিট ছবিতে কাজ করেন মান্না।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker