বিনোদন

যুবতী রাধে গানের ৮০% চুরি: সরলপুর ব্যান্ডের কপিরাইট বাতিল

ময়মনসিংহ গীতিকার বহুল জনপ্রিয় গান ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’-এর বেশ কয়েকটি লাইন চুরি করে নিজেদের তৈরি করা ‘যুবতী রাধে’ গানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরলপুর ব্যান্ডের কপিরাইট স্বত্ত্ব বাতিল করা হয়েছে।

বুধবার রাতে কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

২০২০ সালে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও পার্থ বড়ুয়ায় সংগীত পরিচালনায় ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ প্রকাশের পর তাদের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে গানের সত্ত্বাধিকারী সরলপুর ব্যান্ড।

তাদের অভিযোগ ছিল, ২০১৮ সালের জুনে ‘যুবতী রাধে’ শিরোনামে গানের জন্য সরলপুর ব্যান্ডকে কপিরাইট সনদ দেয় বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। সেই গানের কথা ও সুর হুবহু রেখে সরলপুরের অনুমতি ছাড়াই ‘সর্বত মঙ্গল রাধে’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করেছে আইপিডিসি। সরলপুর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ভোকালিস্ট ও গিটারিস্ট তারিকুল ইসলাম তপনকে ‘যুবতী রাধে’ গানের গীতিকার ও সুরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল কপিরাইট অফিস।

পরে এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে কপিরাইট অফিস বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। বাংলা একাডেমি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগে চিঠি দেয় তারা।

কপিরাইট রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, প্রতিটি বিভাগ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, গানটিতে ময়মনসিংহ গীতিকার জনপ্রিয় গান থেকে হুবহু বেশক’টি লাইন কপি করা হয়েছে। বিমল কুমার মুখোপাধ্যায় রচিত ‘গ্রামের ছড়া’ বইটির একটি ছড়া থেকেও প্রমাণিত হয়েছে যে, সরলপুর ব্যান্ড ‘যুবতী রাধে’ গানের ৩২টি লাইনের মধ্যে ১২টি লাইন হুবহু কপি করেছে। বাকি ৫টি লাইনে এমন কিছু শব্দ তারা যোগ করেছে, যা ওই আসল গানটির ভাব ও অর্থের সঙ্গে মিলে যায়। আশুতোষ মুখার্জি রচিত একটি বইয়েও ‘তুমি হও যমুনা রাধে’ গানের সঙ্গেও ‘যুবতী রাধে’ গানের মিল পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘এই চৌর্যবৃত্তির অপরাধে ‘যুবতী রাধে’ গানটির স্বত্ত্ব সরলপুর ব্যান্ডের আর থাকছে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’

কপিরাইট স্বত্ত্ব নেওয়ার সময় গানটি মৌলিক বলে যে দাবি করেছিল সরলপুর, তাও সঠিক নয় বলে এখন প্রমাণিত হয়েছে বলে জানান জাফর রাজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, সরলপুর ব্যান্ড কপিরাইট আইনের ৮৮ ও ৮৯ ধারা ভঙ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড ও জেলের বিধানও ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে যেহেতু কেউ দাবি জানায়নি। তাই আমরা বিধান দিতে পারি না।

কপিরাইট আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল ও সর্বনিম্ন ৬ মাসের জেলের বিধান রয়েছে।

এর আগে ‘যুবতী রাধে’ গানকে ‘সংগৃহিত’ বলে উল্লেখ করে কণ্ঠশিল্পী সুমি মির্জা লেজার ভিশনের ব্যানারে ইউটিউবে প্রকাশ করেছিলেন। তখন কপিরাইট অফিসে দুই পক্ষের শুনানীতে সুমি মির্জা গানটিকে ময়মনসিংহ গীতিকার পালা বলে দাবি করলেও তার সত্যতা না পাওয়ায় সরলপুরকে কপিরাইট সনদ প্রদান করে কপিরাইট অফিস।

পরে গানটি নিয়ে সুমি মির্জার সঙ্গে সরলপুর ব্যান্ডের দ্বন্দ্ব আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker