বিনোদন

আইসিটি আইনে কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বিচার শুরু

সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনাল।

এ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার আসামি আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন এবং সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর জন্য ২৩ জুন দিন ঠিক করে দেন।

অভিযোগ গঠনের সময় কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসিফকে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। আদালতের প্রশ্নে আসিফ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। পরে আসিফ আকবরের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে বিচারক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন বলে এ আদালতের পেশকার শামীম আল মামুন জানান।

রাষ্ট্রপক্ষে অভিযোগ গঠনের আবেদনের ওপর শুনানি করেন এ ট্রাইবুনালের পালিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম। এর বিরোধিতা করে আসিফের পক্ষে অব্যাহতির আবেদনের শুনানি করেন ব্যরিস্টার মঈন ফিরোজ।

পরে তিনি আদালতপাড়ায় সাংবাদিকদের বলেন, মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।

আসিফের আইনজীবী বলেন, “এ মামলাটি তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলা, যা তদন্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়ার আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই এ মামলায় অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদানই থাকে না ওই আইনের অপপ্রয়োগের বিষয়টি সরকার বুঝতে পেরেই তা বাতিল করেছিল।”

সংগীতশিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিন ২০১৮ সালের ৪ জুন ঢাকার তেজগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আসিফের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় আসিফ ছাড়াও চার-পাঁচজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

গায়ক আসিফ আকবর আইসিটি আইনে গ্রেপ্তার

মামলার এজাহারে শফিক তুহিন বলেন, একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি তার ‘গান চুরির’ বিষয়টি জানতে পারেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, আসিফ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর্ব এন্টারটেইনমেন্ট এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানগুলো বিক্রি করে ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।

ঘটনা জানার পর গত ২ জুন রাতে শফিক তুহিন বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিলে আসিফ আকবর সেখানে বিভিন্ন ‘অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন’ এবং পরে ফেইসবুক লাইভেও ‘অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা’ বক্তব্য এবং ‘শায়েস্তা করার হুমকি’ দেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

আসিফ আকবর সে সময় ফেইসবুক লাইভে এসে দাবি করেছিলেন, জালিয়াতি করে অন্যের গান বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ শফিক তুহিনসহ কয়েকজন শিল্পী করেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা।

তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর আসিফের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও দণ্ডবিধিতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

৫০ বছর বয়সী আসিফের প্রথম অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ প্রকাশিত হয় ২০০১ সালে। ওই অ্যালবামের কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।

পরের বছরগুলোতে ঢাকাই সিনেমার বহু গানে কণ্ঠ দেন আসিফ। ২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর তার অ্যালবাম ছিল বিক্রির শীর্ষে। এক পর্যায়ে তিনি সংগীত প্রযোজনায় নাম লেখান।

৪৭ বছর বয়সী শফিক তুহিন তার প্রথম গান ‘এর বেশি ভালোবাসা যায় না, ও আমার প্রাণ পাখি ময়না’ দিয়েই আলোচনায় আসেন। ২০১১ সালে জিতে নেন সেরা গীতিকারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker