বিনোদন

শাকিব স্যারের কারণেই জিল্লু হতে পেরেছি : শ্যাম ভট্টাচার্য্য

জিল্লু চরিত্রে শ্যাম ভট্টাচার্য্য

‘এই জিল্লু মাল দে’—সংলাপটি যারা ইতিমধ্যে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বরবাদ’ সিনেমাটি দেখেছেন তারা নিশ্চয়ই জানার কথা। হল থেকে বের হওয়ার পর দর্শকদের মুখে মুখে ফিরছে শাকিব খানের এই সংলাপটি। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই জিল্লুকে নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে বেশ।

সিনেমাটিতে শাকিব খানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) জিল্লুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার শ্যাম ভট্টাচার্য্য কলকাতায় থাকলেও তার নানাবাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুরে। পুরো সিনেমাতে শাকিবের সঙ্গে তার রসায়ন দর্শকরা বেশ লুফে নিয়েছেন। সিনেমা মুক্তির পর ওপার বাংলা থেকে দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন দেখতে পাচ্ছে, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় শ্যাম ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে।  দীর্ঘ আলাপে অনেক কিছুই শেয়ার করেন তিনি।

দর্শক প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে শ্যাম ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘এখানে বসে তো সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি না। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের দর্শকেরা যেসব প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তা দেখার চেষ্টা করছি। ফেসবুক, ইউটিউবে সারাক্ষণ চোখ রাখছি, ছবিটি দেখে দর্শকরা কী বলছে জানার জন্য। দেখলাম ছবিটি সবাই খুব পছন্দ করেছে, সেখানে খুব ভালো চলছে।

‘এই জিল্লু মাল দে’—সংলাপটি তো এখন দর্শকের মুখে মুখে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তা নিয়ে বেশ লেখালেখি হচ্ছে। বিষয়টি আপনার নজরে এসেছে কী, এমন প্রশ্নে এই অভিনেতা বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি দেখেছি ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট, এমনকি ইউটিউবেও। এটা তো মূলত শাকিব স্যারের সংলাপ। কিন্তু দর্শকরা আমাকে নিয়ে যেভাবে প্রশংসা করছেন, তাতে সত্যি ভীষণ আনন্দ লাগছে। এমনটাই তো  চেয়েছিলাম। আমার কাছে ব্যাপারটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।’

যোগ করে শ্যাম আরো বলেন, ‘আমি তো এখন পাগল হয়ে আছি ছবিটি দেখার জন্য। আমাদের এখানে কবে মুক্তি পাবে, এখনো জানি না। এত দিন ধৈর্য ধরে থাকতেও পারছি না। অস্থির হয়ে আছি ছবিটি দেখার জন্য। তা ছাড়া আমার পরিবারের সবাইও বেশ উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন ছবিটি দেখার জন্য।’

জিল্লু চরিত্রে ‘বরবাদ’-এ যুক্ত হয়েছেন কিভাবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে এই ছবিটার জিল্লু চরিত্রে আমার অভিনয় করার কথা ছিল না। ছবিটির সহকারী পরিচালকদের কারো একজনের করার কথা ছিল, কিন্তু চরিত্রটির বেশ ওজন থাকায় শাকিব স্যার পরিচালককে পরামর্শ দেন কোনো অভিনেতাকে নিতে।

শুটিং শুরুর তিন-চার দিন আগে আমার কাছে প্রস্তাবটি আসে ঋদ্ধি সিদ্ধি এন্টারটেইনমেন্টের মাধ্যমে। সিদ্ধার্থ আমাকে জানায় যে এ রকম একটা ছবি হচ্ছে, শাকিব খানের পিএসের চরিত্র, পুরো ছবিতে তার সঙ্গেই চরিত্রটিকে দেখা যাবে। এটা শোনার পর আমি সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে গেছি। বলতে পারেন, শাকিব স্যারের কারণেই আমি জিল্লু হতে পেরেছি।’

কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে শ্যাম ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘এককথায় অসাধারণ। এই ছবির মাধ্যমে আমার দুটো স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। এক বড় স্কেলের কোনো সিনেমাতে অভিনয় করা আর দুই, শাকিব খান স্যারের সঙ্গে কাজ করতে পারা। কলকাতায় দেব, জিত দা’ আমার খুব পছন্দ, তাদের সঙ্গে এখনো আমার কাজ করা হয়নি। তার আগে আমি শাকিব স্যারের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে গেছি। এটা আমার কাছে স্বপ্নের মতোই। 

স্ক্রিপ্ট পেলেও আমার কাছে কোনো ব্রিফ ছিল না যে চরিত্রটা কিভাবে কী করব। পরে শুটিং শুরুর আগে শাকিব স্যারের সঙ্গে দেখা করে কিছুটা আলোচনা করে নেই। তিনি আমাকে সালমান খানের বডিগার্ড সেরার উদাহরণ দেন। বললেন, সেরা শুধু বডিগার্ড কিন্তু তুমি এখানে আমার পিএস।

তাই চরিত্রটা বডিগার্ডের না, আমার সব কিছু তোমাকে দেখতে হবে। চরিত্রটা ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে। এ রকম নানা পরামর্শ দিয়েছেন। শুটিংয়ে কোনো ভুল হলে সেটা ধরিয়ে দিয়েছেন এবং শিখিয়েছেন অনেক কিছু। কোনটা কিভাবে করলে ভালো হবে এ রকম অনেক কিছুই। চরিত্রটা যতটুকু ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি তা শাকিব স্যারের কারণে, আর অবশ্যই পরিচালক হৃদয় ভাইয়া। এ রকম একটা চরিত্রে কাজ করতে পারার জন্য তাদের সবার কাছেই কৃতজ্ঞ।’

শাকিব খানের প্রশংসা করতেও ভুললেন না শ্যাম। বললেন, ‘তিনি তো মেগাস্টার। শাকিব স্যার যত দিন শুটিং করেছেন আমিও প্রায় ঠিক তত দিনই শুট করেছি, ৩২-৩৪ দিন হবে সম্ভবত। আমি সারাক্ষণ শুধু ওনাকে দেখছিলাম, একজন স্টারের চালচলন, ভাবভঙ্গি কেমন হয়!

তিনি কাজের প্রতি ভীষণ ডেডিকেটেড একজন মানুষ। কোনো সিরিয়াস দৃশ্যের আগে তিনি একেবারে চুপচাপ নিজের মতো করে থাকেন, আবার মজার দৃশ্যের আগে বেশ ফান মুডে থাকেন। উনি জানেন কখন কী করতে হয়। বলা যায়, মিস্টার পারফেকশনিস্ট। আর সবচেয়ে দারুণ বিষয় যেটা, তিনি সবাইকে বেশ সম্মান করেন। এটা আমি দেখেছি।’

পাসপোর্ট, ভিসা প্রস্তুত থাকলেও আপাতত কলকাতায় অন্য একটি শুটিংয়ের কারণে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না বলে জানালেন শ্যাম। ছবিটি দেখার তর সইছে না তার, তাই যেকোনো সময়েই হুট করে চলে আসতে পারেন বলে জানালেন।

শ্যাম ভট্টাচার্য ২০২২ সালে ‘মন মানে না’ ধারাবাহিকে প্রটাগনিস্ট হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। এরপর আরো বেশ কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। এর বাইরে তাকে দেখা গেছে ‘সেন্টিমেন্টাল’ সিনেমাতেও। সামনে তার আরেকটি সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। 

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker