নীলফামারীর ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে কলংকিত শতবর্ষ উৎযাপনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে শত শত ফেসবুক আইডিতে হাজারো কমেন্টে সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দাবীর পরিপেক্ষিতে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় মিটিং আহবান করে আয়- ব্যয়ের হিসাব দাখিল করলেন কর্তৃপক্ষ। এ সভায়ও অংশ গ্রহনকারী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আবারও অভিযোগ তোলেন বিভিন্ন বিষয়ে।
বিদ্যালয় সুত্র জানা গেছে, উপজেলার ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালে শতবর্ষ অনুষ্ঠান পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও বিশ্বব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ সহ নানান প্রতিকূলতায় যথাসময়ে উৎসব পালন করা সম্ভব হয়নি বলে কর্তৃপক্ষ জানান। এতে দু হাজার দুই শত ৮৪ জন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করে। রেজিষ্ট্রেশন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ২১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয় ২৪ লক্ষ ১১ হাজার ৩৪৫ টাকা। ঘাটতি হয় দুই লক্ষ ৮১ হাজার ৩৪৫ টাকা। চলতি মাসে ১৯ তারিখে শতবর্ষ উৎযাপন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে ১১টি উপ কমিটি গঠন করা হয়। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিকট ১০০০/ টাকা করে রেজিষ্ট্রেশন ফি নেওয়া হয়।
জানা গেছে, Abu Hatem তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, আমার সবার্ঙ্গে ব্যথা, মলম দিব কোথা। অনুষ্ঠানের প্রতিটি সেক্টরেই এত খারাপ অবস্থা যে মেনে নেওয়া কষ্টকর। শতবর্ষ অনুষ্ঠান, যেন তেন বিষয় না। অভিযোগ গুলি হলো, অগোছালো র্যালী, নেই কোন প্লাকার্ড, ফেস্টুন। বিতকির্ত ক্যাপ, লোয়ার কোয়ালিটি টি শার্ট (চার বছর আগের লট মাল)। মূল অনুষ্ঠানে প্রায় সব চেয়ার ফাঁকা, ওনাদের রানিং ছাত্ররাও বসেনি। কোন শিক্ষাবিদ অতিথি নাই। অনেক প্রবীণ ছাত্র ( ১৯৬০/৭০/৮০ সালের) পিছনে বসেছিল। তাদেরকে সামনে বসার জন্য ডাকা হয়নি। দুর্বল উপস্থাপনা। লো কোয়ালিটি দুপুরের খাবার, বিতরণে অনিয়ম, ঘাটতি। ( ২৫০-৩০০ জন তো অনুপস্থিত ছিল)। স্মরনিকায় অমার্জনীয় ভুল, বিতরনে অনিয়ম। দূর্বল সাউন্ড সিস্টেম। প্রবীণ, প্রাক্তন, বর্তমান ছাত্রদের সাথে কতিপয় শিক্ষকদের দূর্ব্যবহার। স্টেজে ২/৩জন ব্যাক্তির দান্ভিকতা, ওনারাই উপস্থাপক ওনারাই বক্তা। এখনো সবার সামনে আয়- ব্যয়ের চিত্র তুলে ধরলেন না। ছোট খাটো সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে একটি কলংকিত শতবর্ষ উদযাপন করলাম।
কমেন্টে (মন্তব্যে) Abdullah Al Aziz লেখেন, এ সব অনুষ্ঠানে সবসময় গুরুত্ব দেওয়া হয় স্কুলের সে সব সূর্য সন্তানদের যারা দেশ ও জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে, কেননা তাদের অভিজ্ঞতা, তাদের উপস্থিতি এবং পরিচিতি স্কুলের নতুন বাচ্চাদের জন্য অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু হতো।
স্কুলের কিভাবে মানোন্নয়ন করানো যাবে, কিভাবে ডোমারের উন্নয়ন করা যাবে – এ ধরনের কোন আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ রকম বিশৃঙ্খলা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে – বিশেষ করে স্বরনিকা প্রকাশনার কাজে যারা ছিল এবং অর্থ সমন্বয় কমিটিতে যারা কাজ করেছে।
Safik Islam মন্তব্য করেন, ভাই ছাগল দিয়ে কি হালচাষ হয়, আয়োজক কমিটির এরা সবাই কান্ডগ্যানহীন গাধার দল, ধান্দাবাজ।
Badhon mehra তার আইডিতে লেখেন, “শতবর্ষের গেঞ্জির লোগোতে এবং ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে বিদ্যালয়ের নামের বানান ভূলসহ অগনিত বানান ভূল।”
মন্তব্যে MD Monjurul Islam লেখেন, এটা পুকুর চুরি সমান।
Rhahimuzzaman Rupok লেখেন, সব ধান্দাবাজি। নাস্তা – ৪০ টাকা, গেঞ্জি – ১০০ টাকা, দুপুরের খাবার – ১৫০ টাকা, মোট ২৯০ টাকা,বাকী স্পন্ডর। টাকা যাক কিন্তু ম্যানেজমেন্ট যদি ঠিক থাকতো তাও হতো, সেটাও ঠিক নাই।
মন্তব্যে Redoanul Hasan লেখেন, আমাদের ফ্রেন্ড ফেব্রিকস নিয়ে কাজ করে, ও বলেছে, এই গেঞ্জির দাম ৭০ টাকা।
এ ব্যাপারে ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: আখতারুজ্জামান সুমন বলেন, আমি স্বীকার করছি খাবার,গেঞ্জি, সাউন্ড সিস্টেম, ব্যবস্থাপনার মান খারাপ ছিল। যে সকল প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন অর্ডার দেওয়া হয়েছিল, তারা আমাদের সাথে প্রতারনা করেছে। আমরা খাবার নিয়ে ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করব। ছবি আছে ।