লালমনিরহাট

তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তার পানি আবারও বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সব গুলো (৪৪টি) গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে জেলার ৫ উপজেলার নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা আবারও বন্যার আশঙ্কা করছেন। 

শুক্রবার  (২৫ আগস্ট) দুপুর ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার, (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) যা বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে দুপুর ১২ টার তিস্তা ব্যারাজপয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটারের পুর পুর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে জেলার ৫ উপজেলার নদী তীরবর্তী ৩ থেকে ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানির পরি মাপ কর্মচারী নুরুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টা থেকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুপুর ১২ টার পর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। বিকেলে পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে  তা ১১ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলেও তিনি জানান।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টায় তিস্তা পানি বিপদসীমার ৩সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে পানি  প্রবেশ করতে শুরু করছে। এতে করে আবারও তৃতীয় বারের মতো নদী পারের মানুষ বন্যার আশঙ্কা করছে। 

এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ বাগডোরা, আদিতমারী উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি ও হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না গড্ডিমারি এলাকায় আবারও বন্যা দেখা দিতে পারে। 

গড্ডিমারি ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সকাল থেকে তিস্তার পানি বেড়েই চলেছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হওয়ায় অত্র এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।

হাতীবান্ধার গড্ডিমারী  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, অত্র ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ড তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত। তিস্তার পানি বাড়ার সাথে সাথে অত্র এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। নদী পাড়ের মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, আগামী দুই/তিনদিনে উজানে ভারী বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে। আবার বৃষ্টিপাত বেশি হলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা আরো ছাড়িয়ে যেতে পারে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যা জানান, পানি বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সব রকম ব্যবস্থা নেয়া আছে। তিস্তাপাড়ের মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker