লালমনিরহাট

পর্যটন শিল্প বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখছে দোয়ানীর বৈরালী

উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পরা সীমান্তবর্তী জেলা গুলির মধ্যে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে শিল্প কারখানা গড়ে না উঠায় তেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। এরপর প্রতিবছর তিস্তা নদীর ভাঙ্গন,বন্যা,আর শুকনো মৌসুমে পানি না থাকায় এই অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন প্রতিবছর হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিবছর তিস্তার ভাঙ্গনে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে, নয়তো নদীর নাব্যতা না থাকায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে চাষ যোগ্য জমি নষ্ট হচ্ছে। এই অঞ্চলের মানুষ তাকিয়ে আছে তিস্তা নদীকে ঘিরে সরকারের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে।

তিস্তা নদীকে ঘিরে মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদী খনন, তীর রক্ষা, নদীর দুপারে স্যাটেলাইট শহড় নির্মান, কৃষি পক্রিয়াজাতকরন শিল্প কারখানাসহ পর্যটন শিল্প বিকাশ ঘটবে, কিন্তূ কূটনৈতিক টানাপোড়নে আপাতত মহাপরিকল্পনা সহসা আলোর মুখ দেখছে না,ফলে এই অঞ্চলের মানুষের দুঃখ দুর্দশা নিত্য সঙ্গী হয়ে রয়েছে।

ঠিক এই সময়ে উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারেজের পাশে গড়ে উঠা বৈরালী রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টারটি বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে বিশাল ভূমিকা রাখছে। ইতিমধ্যেই তিস্তা ব্যারেজ দেখতে আসা দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত বৈরালী রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার।

অথচ দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ,তিনবিঘা করিডোর,বুড়িমারি স্থল বন্দর, পাটগ্রাম ও বুড়িমারির সম্ভাবনাময় চা শিল্পকে ঘিরে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক আসে এই জেলায় ঘুরতে। এই জেলায় পর্যটন শিল্প বিকাশে সরকার পদক্ষেপ গ্রহন করলে অবহেলিত লালমনিরহাট জেলার অর্থনীতি পাল্টে যেতে পারে।

সরকারের পদক্ষেপ না থাকলেও ব্যাক্তি উদ্যোগে ইতিমধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোক্তা এগিয়ে এসেছে গড়ে উঠছে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, হোটেল, মোটেল।

লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে বৈরালী রেস্টুরেন্ট এন্ড কমিউনিটি সেন্টার।দেশের দুর দুরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার্থে তরুন উদ্যোক্তা গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, হাতিবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল দৃষ্টিনন্দন এই হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মান করেন। ঐতিহ্য এবং বৈচিত্র্যতার মেলবন্ধন ঘটিয়ে হোটেলটির নামকরন করা হয় বৈরালী।

হোটেলটি গত ০৭ জুলাই লালমনিরহাট -০১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুভ উদ্বোধন করেন। বৈরালী হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট কাম কমিউনিটি সেন্টার পর্যটন শিল্প বিকাশের পাশাপাশি ৫০জন তরুণের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

বৈরালী হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট কাম কমিউনিটি সেন্টার এর উদ্যোক্তা আওয়ামীলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, রাজনীতি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, সন্মান,পদ,পদবীর পাশাপাশি আমার পিতা মারা যাবার পর গড্ডিমারি ইউনিয়নবাসী তাদের সেবা করার জন্য আমাকে চেয়ারম্যান বানিয়েছে, তাই আমার কোন আশা আকাঙ্খা নেই, সমাজের দ্বায়বদ্ধতা থেকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি তিস্তা ব্যারেজকে ঘিরে গড্ডিমারি ইউনিয়ন মুখরিত হবে দেশ বিদেশের মানুষের পদচারনায় এখানে পর্যটন শিল্প বিকাশ ঘটবে এই লক্ষ্যে বৈরালী হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট কাম কমিউনিটি সেন্টার এর যাত্রা।

তিস্তা ব্যারেজ ঘুরতে আসা রংপুর জুম্মা পাড়ার সৌরভ নামের এক দর্শনার্থী জানান, দেশের বৃহত্তম এই সেচ প্রকল্পটি নানা কারনে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক খবরের শিরোনাম হয়,তাই এটি দেখতে উৎসুক মানুষ দুর দুরান্ত থেকে আসে, এখানে ভাল মানের হোটেল বা রেষ্টুরেন্ট না থাকায় ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও দর্শনার্থীরা বেশিক্ষণ থাকতে চান না। ভালমানের হোটেল রেষ্টুরেন্ট সহ কমিউনিটি সেন্টার হওয়ায় এখন দর্শনার্থীর পাশাপাশি দেশ বিদেশের পর্যটক আসবে এবং শীতকালে এই কমিউনিটি সেন্টার ঘিরে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে আসবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker