লালমনিরহাট

নিখোঁজের তিনদিন পর গৃহবধূ ফরিদার লাশ মিলল তিস্তা নদীতে

নিখোঁজের তিনদিন পর লালমনিরহাটের তিস্তা নদী থেকে ফরিদা বেগম (২৫) নামের দুই সন্তানের এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতুর দেড়শ গজ পূর্বদিকে তিস্তা নদীর পাড়ে জিহবা বাহির করা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ওই গৃহবধু লালমনিরহাট জেলার হারাটী ইউনিয়নের কিসামত চোঙ্গাদারা গ্রামের ছাত্তার আলীর দ্বিতীয় মেয়ে এবং খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মৃত নবিয়ার খাড্ডার ছেলে দুলাল হোসেনের স্ত্রী।

নিহতের পিতা ছাত্তার আলী গত ৩১ মে (মঙ্গলবার) লালমনিরহাট সদর থানায় একটি নিখোঁজ শিরোনামে সাধারন ডায়েরী করেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে তিস্তা সড়ক সেতুর পুর্ব দিকে ওই এলাকার লোকজন নদীর তীরে একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে লালমনিরহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। পরে নিহতের পরিবারকে খবর দিলে ফরিদার বাবা ঘটনাস্থলে এসে তার মেয়ের লাশ সনাক্ত করেন। পরে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।

নিহত ফরিদা বেগমের বাবা ছাত্তার আলী জানান, ৬/৭ বছর পুর্বে পারিবারিকভাবে প্বার্শবর্তী খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের মৃত নবিয়ার খাড্ডার ছেলে দুলাল হোসেনের সাথে তার দ্বিতীয় মেয়ে ফরিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে দুইটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। দুই সন্তান নিয়ে তার মেয়ের সংসার ভালই চলছিল। মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির পাশের লোকজনের মুখে জানতে পারেন তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিহত ফরিদাকে শারীরিক নির্যাতন করে। এর পর হতে ফরিদাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কথা শোনার পর পরই তিনি মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলার পর শ্বশুর বাড়ির লোকজন বলেন সকাল থেকে হঠাৎ করে ফরিদাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর তিনিও তার সকল আত্মীয় স্বজনের সকলের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে কোথাও তার মেয়ের সন্ধান পাননি। এর পরদিন বুধবার (১ জুন) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় মেয়ে নিখোঁজের একটি সাধারন ডায়েরী করেন।

এদিকে নিহতের মা মনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে এই প্রতিবেদককে বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর আগে দুলালের সাথে আমার মেয়ে ফরিদার বিয়ে হয়। বর্তমানে ফরিদার ৬ বছরের শরিফুল ও ৪ বছরের আমিনুর নামে দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে জামাতা দুলাল আমার মেয়েকে কারনে-অকারনে অমানুষিক নির্যাতন করত ও কয়েকবার হত্যারও চেষ্টা করেছিল সে। এবার সে আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ তিস্তা নদীতে ফেলে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম বলেন, গৃহবধূ ফরিদাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। অথবা এটি আত্মহত্যাও হতে পারে বলে তিনি জানান। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তরিত জানা যাবে।

এ ঘটনায় নিহত ফরিদা বেগমের শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker