দির্ঘদিনের প্রেম, এরপর দৈহিক সম্পর্ক পরে স্কুলছাত্রী জান্নাতী আক্তার প্রেমিককে বিয়ে করতে বললে প্রেমিকের অস্বীকৃতি। বিয়ে না করায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে ৭ম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতী আক্তার। অতঃপর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলে প্রেমিক জাহাঙ্গীর আলমের (২৬) বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মৃত জান্নাতীর মা।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে জান্নাতীর মা হাশি বেগম বাদী হয়ে মেয়ের আত্মহত্যার প্ররোচনারকারী জাহাঙ্গীর আলমকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মৃত স্কুলছাত্রী জান্নাতী আক্তর লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সাতপাটকী গ্রামের রিক্সা চালক মামুন মিয়ার মেয়ে এবং স্থানীয় মহেন্দ্রনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম একই এলাকার আফছার আলীর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, স্কুল ছাত্রী জান্নাতীর আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন জাহাঙ্গীর আলম। পরে প্রেমের সম্পর্ক দৈহিক সম্পর্কে গড়ায়। সম্পর্ক গভীর হলে প্রেমিকা জান্নাতী বিয়ের জন্য প্রেমিক জাহাঙ্গীরকে চাপ দেয়। এরই এক পর্যয়ে গত ২৯ মার্চ স্কুল থেকে ফেরার পথে জান্নাতীকে স্থানীয় মেশিন ঘরে ডেকে নিয়ে যায় প্রেমিক জাহাঙ্গীর। সেখানে পুনরায় দৈহিক সম্পর্ক করার পর জান্নাতী পুনরায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে প্রেমিক জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিকা জান্নাতীকে মারধর করে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে জানাজানি হলে ওই দিনই বিকেলে নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে স্কুল ছাত্রী জান্নাতী।
খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে প্রেমিক জাহাঙ্গীরের পরিবার স্থানীয়ভাবে আপোষ মিমাংসার অপচেষ্টা চালায়। অবশেষে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর প্রেমিক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মেয়ের আত্মহত্যার প্ররোচনা এনে শুক্রবার রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন মৃত জান্নাতীর মা হাশি বেগম।
মৃত জান্নাতীর মা হাশি বেগম বলেন, আমার মেয়ের সাথে জাহাঙ্গীরের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে জান্নাতী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে জাহাঙ্গীর আমার মেয়েকে মারপিট করে। এই অপমান সহ্য করতে না পেয়ে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। এরপর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তারা আমাদের অনেক লোভনীয় প্রস্তাব দিয়েছিল। গরিবের ইজ্জত তারা টাকা দিয়ে কিনতে চেয়েছিল। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি, বিচার পেতে সর্বচ্চ চেষ্টা করে যাব।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ আলম বলেন, জান্নাতী আত্মহত্যার ঘটনায় ওই দিনই থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে। আজ আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ পেলাম। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।