দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হতে হলে এখন থেকে দলের নেতাকর্মীদের সমর্থন পেতে হবে। সিন্ডিকেট কমিটি বা ‘পকেট কমিটি করার কোনো সুযোগ না থাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশে জেলা পর্যায়ে নেতারা ভোটিং পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচন করছেন। ইতিমধ্যে গত কয়েক মাসে জেলার বেশ কিছু আহ্বায়ক কমিটি এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘বর্তমানে রাজপথের কর্মসূচি না থাকায় বিএনপি এখন মূল দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলো পুনর্গঠনে ব্যস্ত সময় পার করছে। আহ্বায়ক কমিটিগুলোকে সংশ্লিষ্ট জেলার উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠন করে তিন মাসের মধ্যে কাউন্সিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মূলত দল পুনর্গঠনের নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন বিএনপি’র হাইকমান্ড। তাই বদলে ফেলা হয়েছে বিএনপির কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। এখন থেকে কাউন্সিলররা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন।
দুলু আরও বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে সারাদেশে বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা। এখন উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটির কাউন্সিল চলছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতা নির্বাচন হচ্ছে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে। দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীনদের নিপীড়ন-নির্যাতনে পর্যুদস্ত বিএনপিতে কাউন্সিল ঘিরে প্রাণ ফিরে আসতে শুরু করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী দলে পদ পেতে হলে নেতাকর্মীদের কাছে জনপ্রিয় হতে হবে। তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। তৃণমূল থেকেই নেতা নির্বাচিত করার কার্যক্রম চলছে। এর অংশ হিসাবে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, পৌর, জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটি হবে।
তিনি বলেন, ভোটের মাধ্যমে জেলা কমিটিকে পুনর্গঠন করা হবে, এতে যোগ্য ও ত্যাগীরা জায়গা পাবেন এবং দলে গতি আসবে। ইতিমধ্যে জেলার কোথাও কোথাও ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। আশা করছি দলে নেতৃত্ব নির্বাচনের যে গতি চলছে তাতে আমরা সফল হব।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মার্চ লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি, সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। এজন্য বড়বাড়ি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোর্ত্তুজা মিঠুকে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব দেয়া হয়। নির্বাচন কমিশন তার নিজ দায়িত্বে নির্বাচন পরিচালনা করেন। রাজপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতৃত্ব নেয়ার জন্য সভাপতি পদে দুইজন, সাধারন সম্পাদক পদে দুইজন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দিতা করেন। ৪৬৯ ভোটের মধ্যে ৩৯৭টি ভোট কাস্ট হয়। এর মধ্যে মাহবুবুর রহমান লিটন ২৫৫ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি রেজাউল ইসলাম মাষ্টার ১৪২ ভোট পান। সম্পাদক পদে একজনমাত্র প্রার্থী হওয়ায় রফিকুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শ্রী মনমত রায় ২৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আতাউর রহমান আতা ১১০ ভোট পান।
নেতা নির্বাচনে ভোটারা সম্পুর্ন সুষ্ঠু ভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন এবং তাদের নেতা নির্বাচিত করেন। ভোটে পরাজিত সকল প্রার্থীরা আগামীতে বিএনপির সকল কর্মসুচি ও কর্মকান্ডে হাতে হাত রেখে কাজ করবেন বলে মত প্রকাশ করেন। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করেন।