লালমনিরহাট

লালমনিরহাটে চলছে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট, চরম দুর্ভোগে সাধারণ যাত্রীরা

লালমনিরহাটে মটর শ্রমিকদের দুই গ্রুফের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে হামলা, তেলের পাম্প ভাংচুরের প্রতিবাদে ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী রোডে আন্তঃ জেলার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের ।

সোমবরা (২১ মার্চ) সকাল থেকে লালমনিরহাট জেলায় বাস মিনিবাস ও মাইক্রোবাসের সাধারন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে।

জানাযায়, দীর্ঘদিনের পুরাতন কমিটি দিয়ে চলছে লালমনিরহাট বাস মিনিবাস শ্রমিক সংগঠন। পুরাতন কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুল শ্রমিকদের কার্যালয়ের জন্য ক্রয় করা জমি গোপনে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং দুইভাগে বিভক্ত হয় শ্রমিকরা। পরে রোববরা দিনব্যাপি দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল হকের তেলের পাম্পে হামলা চালায় বর্তমান কমিটির সভাপতি সম্পাদক গ্রুপের শ্রমিকরা।

অনেকটা চাপে পড়ে লালমনিরহাটে জেলা মাইক্রোবাস, বাস ও মিনিবাস শ্রমিকদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুল আহমেদ ২১ মার্চ শ্রমিক ইউনিয়নের একটি সাধারন সভার ডাক দেয়। বিষয়টি জানার পর সাধারন শ্রমিকদের গ্রুপটিও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সাধারণ শ্রমিকদের পক্ষ থেকে তারাও একটি সাধারণ সভা আহবান করে। এর পরেই শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা।

শ্রমিকদের ডাকা সাধারন সভা এবং উভয় পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রোববার দিনব্যাপি দুই গ্রুপের মধ্যে চলে দাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের ৫জন আহত হয়। ঘটনার পর পরই রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা।

এরই প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকের উপর হামলা ও লালমনিরহাট বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বিনিময় ফিলিং স্টেশনে হামলা, ভাংচুর ও ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে শ্রমিকদের একটি পক্ষ সোমবার থেকে কর্মবিরতি ও অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।

কর্মবিরতির ডাক দেওয়া সাধারন শ্রমিকরা জানান, বর্তমান কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুলের নেতৃত্বে বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী হামলা করে। পরে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে শহরে মিছিল করে। মিছিলের এক পর্যায়ে কয়েকজন বিচ্ছিন্ন হয়ে বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের বিনিময় ফিলিং স্টেশনে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এ ঘটনায় রাতে পাম্প ম্যানেজার বাদি হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পরে বিকেলে পুলিশ এজাহার নামিয় দুইজনকে গ্রেফতার করে।

লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের ১ম বর্ষ শিক্ষার্থী শিহাব হোসেন বলেন, আমি সৈয়দপুর যাব কিন্তু হাড়ীভাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাস স্টান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ। আমার খুব জরুরী কাজ থাকায় সৈয়দপুর যেতেই হবে আবার আজকেই ফেরত আসতে হবে। এখন আমার খুব অসুবিধা হয়ে গেল।

এদিকে লালমনিরহাটে জেলা মাইক্রোবাস, বাস ও মিনিবাস শ্রমিকদের একটি পক্ষের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা কোন পরিবহন ধর্মঘট ডাকি নাই সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। তবে লোকাল বাসগুলো বন্ধ রয়েছে শুনেছি।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি তদন্ত) মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, যেহেতু শ্রমিকদের উভয় পক্ষই সমাবেশ ডেকেছে সে কারনে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে সমাবেশ বন্ধ রাখার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ ছাড়া শহরে যেন আবার শ্রমিকদের মধ্যে গোন্ডগোল না লাগে সেজন্য কেন্দ্রীয় বাস স্টান্ডসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker