লালমনিরহাট

মটর শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মহাসড়ক অবরোধ

লালমনিরহাটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মটর শ্রমিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সাধারন শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেছে। এ সময় শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির সমর্থকরা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল হকের বিনিময় তেলের পাম্পে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এ ঘটনায় সাধারন শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধের করায় ঢাকাগামি নৈশ্যকোচের যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়ে।

রবিবার (২০ মার্চ) রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট পুলিশ লাইন্সের পাশে বাস টার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিনের পুরাতন কমিটি দিয়ে চলছে লালমনিরহাট বাস মিনিবাস শ্রমিক সংগঠন। পুরাতন কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সম্পাদক বুলবুল শ্রমিকদের কার্যালয়ের জন্য ক্রয় করা জমি গোপনে বিক্রি করে দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারন শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ তৈরী হয় এবং দুইটি ভাগে বিভক্ত হয় শ্রমিকরা। পুরাতন ও মেয়াদত্তীর্ন কমিটি বিলুপ্তের দাবিতে রোববার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারন শ্রমিকরা। এতে বর্তমান কমিটি বাঁধা দিলে দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৩জন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।

এ ঘটনায় বিকেলে শিফাত হোসেন মুন্না নামে একজন সাধারন শ্রমিক বাদি হয়ে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদকে প্রধান করে ৬জনের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এরই জের ধরে রাত ৮টার দিকে বর্তমান কমিটি আমিনুল-বুলবুল গ্রুপের কতিপয় শ্রমিক শহরে দেশি অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাসটার্মিনালের দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি পুলিশ লাইনসের সামনে বিনিময় ফিলিংস স্টেশনের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সাধারন শ্রমিকরা ছুটে এলে পিছু হটে বর্তমান কমিটির শ্রমিকরা।

পরে বিনিময় ফিলিংস স্টেশন ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে সাধারন শ্রমিকরা রংপুর-লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় ঢাকা গামি নৈশ্যকোচ গুলোসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং দির্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে চরম বিপাকে পড়েছে নৈশ্যকোচের যাত্রীরা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে যান অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামান। তিনি শ্রমিকদের সাথে কয়েক দফায় কথা বলে রাতের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলা শহরে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে যেকোন মুহুর্তে বড় রকমের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন সচেতন মহল।

শ্রমিক নেতা রবিন হোসেন বাপ্পি জানান, দুপুরে তারা একবার হামলা চালিয়ে আমাদের সাধারণ শ্রমিকদের আহত করে। পরে আবার তারা রাতে বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাধারন শ্রমিকদের না পেয়ে বিনিময় তেলের পাম্পে হামলা চালুয়ে ভাংচুর করে। আমরা সাধারন শ্রমিকরা এর তীব্র প্রতিবাদ এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানাই।

লালমনিরহাটের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামান জানান, অপরাধীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সাধারন শ্রমিকরা তাদের অবরোধ তুলে নেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। যোগাযোগ সচল রয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker