ফুফুর জমি দখল করে সেনা সদস্যের দালান ঘর নির্মান, প্রতিবাদ করায় মেরে হাসপাতালে পাঠালো ফুফুকে
লালমনিরহাটে এক সেনা সদস্য তার নিজের ফুফুর ঘর ভেঙে জমি দখল এবং ফুফুকে মেরে হাত-পা ভেঙ্গে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (০৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ফুফু বাদি হয়ে ভাতিজা সেনা সদস্য হাবিবুর রহমানসহ ৪ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের তেলীপাড়া (ভাটাপাড়া) এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত আছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ফুফু সুফিয়া বেওয়া তার মেয়ে অন্তসত্তা এবং সন্তান জন্ম দেয়ার কারনে ৫/৬ বছর আগে মেয়ের বাড়ি কুড়িগ্রাম যায়। এই সুযোগে সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান ফুফুর টিনের ঘুর ভেঙে জমি দখল করে সেখানে তার দালান ঘর নির্মান করে। গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারী) ফুফু বাড়িতে ফিরে এসে দেখেন তার ঘরও নেই জমিও নেই। পরে তার বাড়ির পাশেই একটু ফাঁকা জায়গায় একটি চালাঘর বানিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু ফুফুর থাকার জায়গা হলেও সেখানে ছিল না টয়লেট ও টিউবয়েলের ব্যবস্থা। এজন্য অন্যের বাড়িতে গিয়ে ফুফুকে টয়লেট ও গোসল করে আসতে হতো। এই সমস্যার কথাটি ভাতিজা হাবিবুরকে বললে সে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে এবং তার ফুফুকে বেদম মারধর করে। এসময় হাবিবুরের স্ত্রী ও মা এসেও তাকে মারপিট করে এবং হাত-পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে ফুফু সুফিয়া বেওয়াকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে ফুফু সুফিয়া বেওয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় ফুফু সুফিয়া বেওয়া বাদি হয়ে রবিবার দুপুরে ভাতিজা সেনা সদস্য হাবিবুর রহমানসহ ৪ জনকে আসামী করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ফুফু সুফিয়া বেওয়া কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, যে সন্তানকে কোলে পিঠে করে মানুষ করলাম সেই ছেলেই আমার জমি দখল করলো, তার দালান ঘর নির্মান করলো। আজ আমি তাকে শুধু একটা টয়লেটের ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলতেই সে আমাকে মারলো। থানায় অভিযোগ দিয়েছি আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত সেনা সদস্য হাবিবুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফুফুর ঘর ভেঙে আমি দালান ঘর নির্মান করেছি ঠিকই কিন্তু ফুফুকে তার থাকার জন্য ঘর তৈরী করে দিয়েছি। শুধু টয়লেট ও টিউবয়েল দেয়া হয়নি। এজন্যই ফুফু প্রতিদিন গালিগালাজ করে। তাই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।