লালমনিরহাট

শীতে কাহিল লালমনিরহাটের ৬৩ চরের বাসিন্দারা

মাঘের শেষে এসে মৌসুমি বায়ু প্রবাহে কাঁপছে লালমনিরহাটের পাচঁ উপজেলাসহ তিস্তার চরের ৬৩ চরের মানুষ। গত তিনদিনের শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষজন। তাপমাত্রা ৬/৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। অসহায় মানুষগুলো খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। গত শুক্রবার সারাদিন লালমনিরহাটে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় লালমনিরহাট সূর্যের দেখা দিলেও কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে হাড়কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে খুব সকালে কাজের সন্ধানে রাস্তায় বের হয়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তাপমাত্রা রেকর্ড কিপার আনিছুর রহমান জানান, রবিবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৬ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের অফিস সুত্রে জানান, গতশুক্রবার সকাল থেকেই লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতা লক্ষ্য করা গেছে। সন্ধ্যায় তাপমাত্রা কমে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। যা শুধু লালমনিরহাটে নয়, চলতি মৌসু্মে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ আবহাওয়া ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শীত মৌসুমের শেষ দিকে এসে লালমনিরহাটে জেঁকে বসেছে ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডা। এর পাশাপাশি বরফ-শীতল বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের তীব্রতা। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শিশু-বৃদ্ধরা তো ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

কালীগঞ্জ উপজেলার ভ্যান চালক সফিয়ার রহমান বলেন, গত তিনদিন থেকে খুব ঠান্ডা। ঘর থেকে বাহিরে কাজে যেতে পারছিনা। ভাড়া নাই তারপরেও ভাড়ার আশায় ভ্যানেই বসে আছি।

লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা: নির্মলেন্দু রায় জানান, হাঁপানি, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডাইরিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শীতের তীব্রতা আরো বাড়লে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। যাহা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারই অপ্রতুল। তারপরেও আরও শীতবস্ত্রের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker