রাজশাহী

ঘুষ নিতে বাড়িতে আসা কনস্টেবলকে আটকে ৯৯৯–এ ফোন, তারপর…

গতকাল শনিবার আক্কেলপুর পৌরশহরের শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার মৃত সেকেন্দার আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ওই কনস্টেবলের নাম আশিক হোসেন। ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাঁকে আটকে রাখেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার বাসিন্দা সোহেল রানা ও স্থানীয় লোকজন।

ঘটনার বিষয়ে আক্কেলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কনস্টেবলের ওই ঘটনায় এসপি স্যারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি।’ এর বাইরে আর বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি তিনি।

সোহেল রানার ভাষ্যমতে, সপ্তাহখানেক আগে জমিজমা নিয়ে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে থানার এক উপপরিদর্শকের (এসআই) সঙ্গে কনস্টেবল আশিক হোসেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লায় এসেছিলেন। তখন সোহেল রানার কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন আশিক। দুই দিন পর রাতের বেলায় স্থানীয় একটি সড়কে কনস্টেবল আশিক সোহেল রানার পকেট তল্লাশি করে ইয়াবা পান। তখন তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। সোহেল রানা পরদিন সকালে ঘুষের টাকা দেবেন বলে কথা দিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন। পরদিন শুক্রবার সকালে কনস্টেবল আশিক ঘুষের টাকা নিতে সোহেলদের বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে তাঁকে পাননি। গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আশিক হোসেন শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লায় সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে ঘুষের ২০ হাজার টাকা চান। সোহেল রানা কনস্টেবলের হাতে ৫ হাজার টাকা দেন। এ সময় সোহলের স্ত্রী মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। টের পেয়ে টাকা ফেরত দিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করেন আশিক। তখন সোহেল রানা কনস্টেবল আশিককে তাঁর বাড়ি আটকে রেখে ৯৯৯-এ কল করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সেখানে জড়ো হন। সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ সোহেল রানাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মুঠোফোনে থাকা ঘুষ লেনদেনের ভিডিও মুছে ফেলে। এরপর আটক থাকা কনস্টেবলকে নিয়ে যায় তারা।

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কনস্টেবল আশিক হোসেন। তাঁর দাবি, সোহেল রানা একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁকে চিহ্নিত করতে সাতসকালে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন। এ কারণে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

শ্রীকৃষ্টপুর মহল্লার বাসিন্দা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌস হোসেন বলেন, সোহেল রানার বাড়িতে সাদাপোশাকে একজন কনস্টেবলকে আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। ঘটনার সময় একটি মুঠোফোন নিয়ে সোহেল রানার সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা কাড়াকাড়ি করছিলেন। সেটি কার ফোন ছিল তিনি জানেন না।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker