‘আমার একটাই ছেলে ছিলো, আমার ছেলেরে আন্দোলনে গুলি কইয়া মাইরা ফাইলাইসে’। আমার ছেলেরে যারা মারছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই, কান্না বিজড়িত কন্ঠে এ কথা বলেন শহীদ ইকরামুল হক সাজিদের মা।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার দিনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আন্দোলনে যাওয়ার আগে, দুপুরে যোহরের নামাজ আদায় করে ভাত খায়। খাওয়ার পর আমি বললাম, বাবা দু রাকাত নফল নামাজ পড়ো। নামাজ শেষে বাসা থেকে বের হয় সাজিদ, সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামে আর আমার দিকে তাকিয়ে বলে, আমার কিচ্ছু হবে না মা। আমার জন্য দোয়া কইরো। সেই গেল, আর ফিরলো না!
তিনি আরো জানান, সাজিদ বলতো – মা বাঁচলে বীরের মতো বাঁচবো, মরলে বীরের মতো মরে যাবো।
বড় বোন ফারজানা বলেন, আমার ভাই সাজিদ দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছে। ওদের আত্মত্যাগে দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতার মূল্যটুকু দেশের মানুষ ও নতুন সরকার রাখুক, এবং হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনুক।
জানা যায়, ৪ আগষ্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ এলাকায় আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী একরামুল হক সাজিদ। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচে) ভর্তি করা হয়। অবশেষে ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১৪ আগষ্ট হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৫ আগষ্ট টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার বিল-কুকড়ী গ্ৰামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর শহীদ সাজিদের বাবা মা। সন্তানের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান তারা।