সূর্যমুখী চাষে কৃষকরা নতুন স্বপ্নের সূচনা
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামে রোপা আমন ধান কাটার পর জমিগুলো এক রকম পতিত হিসেবেই পড়ে থাকে। এরপর সেখানে দীর্ঘ সময় পর করা হয় পাট চাষ। মধ্যবর্তী সময়ে জমিগুলো পতিত না রেখে কৃষি বিভাগের পরামর্শে পতিত জমিতে সূর্যমুখী চাষে কৃষকরা নতুন স্বপ্নের সূচনা করেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে সূর্যমুখীর। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করলেও ভালো ফলন দেখে স্বপ্ন বুনছেন এলাকার অন্যান্য কৃষকরা।
আরো পড়ুন:বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে দু’দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
সরেজমিনে দেখা গেছে, সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বিপুল প্রকৃতি প্রেমী ছুটে আসছেন পরিবার নিয়ে। গ্রামে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সূর্যমুখীর আবাদ যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার। অনেকেই বাগানে ঢুকে শখ করে ছবি তুলেন। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
সদর উপজেলার মাইজপাড়া গ্রামে সেলিম, জহির, বাবু ও কাইয়ুম চার কৃষক মিলে চাষ করেছেন সূর্যমুখী ২ একর জমিতে। দেশি ঘানি ব্যবহার করলে পরিপক্ক সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তেল ভাঙানো যায়। এই তেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কম বলে জানা যায়।
সূর্যমুখী ফুল সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে। সকাল বেলা পূর্ব দিকে তাকিয়ে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের সঙ্গে ঘুরতে থাকে। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার দৃশ্যের সঙ্গে সূর্যমুখী ফুল তাকিয়ে থাকার দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম।
আরো পড়ুন: মরা প্রাণীর দুর্গন্ধ দিয়ে প্রতিবেশীকে হেনস্থা করেন খলিল
চাষি সেলিম সরকার বলেন, সূর্যমুখী এলাকায় এবারই প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করেছি। প্রথম আমার অনীহা ছিল এখন অনেক ভালো লাগছে। ফুলগুলো ফোটাতে আমাদের এলাকায় এখন একটা আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। এই ফসলে খুব একটা খরচ হয়নি, অফিস থেকে বীজ দিয়েছে সার দিয়েছে, আমরা শুধু নিড়ানি দিয়েছি।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুজ্জামান সুমন বলেন, মহিনন্দ ইউনিয়নে এবারই প্রথম সূর্যমুখী চাষ হয়েছে।রোপা আমনের পর এই জমিগুলোতে পাট চাষ করত কিন্তু এর মধ্যবর্তী সময়ে আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে সূর্যমুখী চাষটি করতে বলেছি, এলাকার মানুষের মধ্যে একটি আশার আলো সঞ্চার হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল এই পতিত জমিগুলোকে চাষাবাদের আওতায় আনা। এখন চাষিদের মধ্যে আগ্রহ জন্মেছে। আগামীতে আরও সূর্যমূখী চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি।