পুনম শাহরীয়ার ঋতু, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি
গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার বাইমাইল এলাকার সোমবার ফাইজা নামের একটি পোশাক তৈরির কারখানার শ্রমিকরা ঈদ বোনাস, ওভারটাই ও বকেয়া বেতনের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
এসময় পুলিশ-শ্রমিক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। পরে লাঠি চার্জ করে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
শ্রমিক ও পুলিশ জানায়, বাইমাইল এলাকার ফাইজা ইন্ডাষ্টিজ লিমিটেড নামক কারখানায় গত রোববার থেকে শ্রমিকরা ঈদ বোনাস, ওভারটাইম ও বকেয়া বেতনের দাবি করা হলে সোমবার দিন দেওয়া হবে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জানান।
পোশাক তৈরির কারখানার সেই ঘোষণামতে শ্রমিকরা সোমবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার কর্মস্থলে যোগ দিয়ে তাদের দাবীকৃত টাকা দাবী করেন। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ আরো কয়েকদিন পরে দেওয়া হবে বলে শ্রমিকদের জানানো হয়। এ খবর কারখানার সব শ্রমিকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক কর্ম বিরতী করে কারখানার বাহিরে এসে বেতন, ঈদ বোনাস ও ওভার টাইমের টাকার দাবীতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এক পর্যায় উত্তেজিত শ্রমিকরা সকাল ১১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এসে সড়ক অবরোধ করেন। শ্রমিকরা মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করার কারণে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে থানা, হাইওয়ে ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়। দুপুর ১টার দিকে শিল্প,হাইওয়ে ও থানা পুলিশ যৌথভাবে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য লাঠিচার্জ করেন।
এসময় শ্রমিকরা পুলিশের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশের সাথে শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষের সময় পথচারীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শ্রমিকরা জানান, বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও ওভার টাইমের জন্য রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে কারখানার ভিতরে বিক্ষোভ করা হয়।
এসময় কারখানা কর্তৃপক্ষ সোমবার সকালে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ পরিশোধ না করার কারণে আমরা আন্দোলন করতে থাকি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রমিকরা অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশ শ্রমিকদের উপর হামলা করেছে। এতে অনেক শ্রমিক আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে ফাইজার ইন্ডাষ্টিজ লিমিটেড নামক কারখানার কর্তৃপক্ষের কারোর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোয়াব মো: সামসুর রহমান বলেন, সকাল থেকে ব্যস্ত মহাসড়ক অবরোধ করে জন দুর্ভোগের সৃষ্টি করে শ্রমিকরা। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরাতে না পেরে দুপুরের পর আমরা পুলিশ সদস্যরা লাঠি চার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্র ভঙ্গ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেই। পরে দুপুরে ১টার পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আবার যান চলাচল শুরু করে।