পুনম শাহরীয়ার ঋতু, জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকায় গত রোববার রাতে পুকুর থেকে মাছ চুরির অভিযোগ এনে জাকির হোসেন নামের এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনকারীরা পিটিয়ে ঐ যুবকের হাত পা ভেঙ্গে পরের দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসার জন্য উপজেলার মৌচাক পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। আহত জাকির হোসেন উপজেলার নয়াপাড়া এলাকার মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে। সে এলাকায় ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করে।
এলাকাবাসী ও আহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নয়াপাড়া এলাকার জহির হোসেনের মাছের খামারে গত কয়েকদিন আগে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। পরে ওই ঘটনায় এলাকার জাকির হোসেনকে চুরির সন্দেহে করে খামারের মালিক জহির হোসেন গত রোববার রাত ৮টার দিকে নয়াপাড়া এলাকার রাস্তার পাশ থেকে জাকিরকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে খামারের অফিস কক্ষে নিয়ে রশি দিয়ে বেধে রেখে লোহার রড দিয়ে রাতভর কয়েক দফায় মারধর করে। তার পিটুনিতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে জাকির। পরের দিন সোমবার জাকিরের অবস্থা খারাপ হলে পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে সন্ধ্যা দিকে মৌচাক পপুলার হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করে জহিরের লোকজন দিয়ে পাহারা দিয়ে রাখে।
নির্যাতনকারীরা মারধরের ঘটনা গোপন রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে বলে ভর্তি করেন। পরে বিষয়টি সোমবার রাত ৯টার দিকে জাকিরের পরিবারের লোকজন জানতে পারে জাকির মৌচাক পপুলার হাসপাতালে গিয়ে জাকিরের পা এবং হাত ভাঙ্গা অবস্থায় দেখতে পান।
জাকিরের ছোট ভাই কবির হোসেন বলেন, মাছ চুরির অভিযোগ এনে আমার ভাইকে জহির খামারে নিয়ে গিয়ে বেধম মারপিট করেছে। তার হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। জখম করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানেও। পরে আমাদের কিছু না জানিয়ে জাকিরকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে।
অভিযুক্ত জহির হোসেন বলেন, আমার খামারের মাছ চুরি করেছে, তাই তার বিচার করা হয়েছে। চুরি করলে তার বিচার করব না। পুলিশের উপর ভরসা নাই। পুলিশ টাকা খেয়ে আসামী ছেড়ে দেয়।
হাসপাতালের পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে নিয়ে এসে বলা হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। পরে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখা গেছে জাকির হোসেনের একটি পা এবং একটি হাত ভেঙ্গে গেছে। তা ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের দাগ রয়েছে।
স্থানীয় বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলাল উদ্দিন বলেন, এভাবে মারা ঠিক হয়নি। বিষয়টি অমানবিক হয়েছে। জাকির চুরি করে থাকলে আইনের হাতে তুলে দিতে পারতো।
কালিয়াকৈর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) অকবর আলী বলেন, এঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।