চট্টগ্রাম

বিপাকে চবি কর্মকর্তা, চাঁদার দাবিতে ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক কর্মকর্তার বাড়ি নির্মাণে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর গড়দুয়ারা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যান ও এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। তাদের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং নিজ পৈতৃক সম্পত্তিকে সরকারি সম্পত্তি বানিয়ে গাছ কর্তন ও জবর দখলেরও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। এমতাবস্থায় বাড়ি নির্মাণে বিপাকে পড়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইলেন ওই কর্মকর্তা।

জানা যায়, হাটহাজারীর ৯নং গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে ইলিয়াছ খান চৌধুরী বাড়ীতে নিজ পৈতৃক সম্পত্তিতে ২০২১ সালের শুরুতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের রোষানলে পড়েন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকতার হোসাইন লাভলু নামের ওই কর্মকর্তা। 

তিনি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও পিলার তৈরীর কাজ শেষে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করতেই সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, বর্তমান ইউপি সদস্য মো: ওবায়দুল্লাহসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হুমকি ধমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মো: সরওয়ার মোর্শেদ তালুকদারের কাছে বিষয়টি জানানো হলে তিনিও নিরব ভূমিকা পালন করেন বলে জানা ওই ভুক্তভোগী। 

Image

ভুক্তভোগী এস এম আকতার হোসাইন লাভলু বলেন, আমি নিজের পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করলে সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সহ তার সাঙ্গোপাঙ্গরা আমার বাড়ি নির্মাণে বাঁধা দেয়। পাশাপাশি বাড়ি নির্মাণে নিয়োজিত শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি নির্মাণ বন্ধ রাখে। আমার পৈতৃক সম্পত্তির গাছ কেটে জবর দখলেরও চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। বর্তমান চেয়ারম্যান সরওয়ার মোর্শেদও তাদের এসব অপকর্মে ইন্ধন দিচ্ছে। এছাড়া তারা আমার কাছ থেকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাও দাবি করছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগী লাভলুর বাড়ির প্রায় ২০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দেয়াল নির্মাণ ও পিলার স্থাপনের কাজও প্রায় সম্পন্ন। এছাড়া রাস্তা নির্মাণের অযুহাতে তার পৈতৃক সম্পত্তির বেশ কয়েকটি গাছও কাটা হয়েছে।এমতাবস্থায় সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের দাবি এই জায়গাগুলো খাস জমি। এই জমির উপর রাস্তা নির্মিত হবে এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে। 

Image

তিনি বলেন, এখানে আমার কোনো স্বার্থ নেই। এলাকাবাসীর উন্নয়নের আমি আগেও কাজ করেছি এখনও কাজ করে যাচ্ছি। জনাব লাভলু বরং সরকারি রাস্তার উপর ঘর নির্মাণ করছেন যা আমরা জানতে পেরে বাঁধা দিয়েছি। এখানে চাঁদাবাজি প্রশ্নই আসেনা। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট আমি এসবের সাথে জড়িত নয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগীর বড় ভাই সাবেক উপসচিব এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার ভাই পরিবারের সবার অনুমতিক্রমে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে অন্যায়ভাবে প্রতিবেশী জসিম উদ্দিন আমাদের বাড়ি নির্মাণে বাধা দিচ্ছেন। শুরুতেই কোন বাধা না দিলেও, এখন রাস্তার দোহাই দিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। যদিও আমরা চলাচলের রাস্তা বাদ দিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করি তারপরও তারা জোর জবরদস্তি করে শ্রমিকদের বাঁধা দিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখে। আমরা এই বিষয়ে ন্যায় বিচার চাই সরকার ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কাছে।

Image

জানা গেছে, ভুক্তভোগী এস এম আকতার হোসাইন লাভলু বাদী হয়ে প্রথমে হাটহাজারী মডেল থানায় অভিযোগ ও পরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজি, জায়গা জবরদখল ও গাছ কাটার তিনটি মামলা করেন।

এদিকে স্থানীয় ৯নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সরওয়ার মোর্শেদ তালুকদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে অবগত আছি ইলিয়াছ খান চৌধুরী বাড়ীতে রাস্তা নিয়ে যে সমস্যা সেটি সরেজমিনে এমপি মহোদয়, এসিল্যান্ডসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোক এসে দেখে গেছেন। আমার সোজা কথা সরকারি রাস্তায় কোনো ঘরবাড়ি নির্মাণ হবেনা। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ এটার সমাধানও আমি শান্তিপূর্ণভাবে চাই। কারণ এমপি মহোদয় বলেন, গেছেন এখানে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়। এস এম আকতার হোসাইন লাভলু যেসব অভিযোগ করেছেন তা আদালত কর্তৃক মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। সুতরাং এখানে আমার কিছু বলার নাই।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker